শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ১৫

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে জালিয়াত চক্রের তিন হোতাসহ মোট ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন ছাত্রলীগ নেতাও রয়েছে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মোট ৮৬টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৭৬৯টি কক্ষে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে আটক ১৫ জনের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা জালিয়াত চক্রের অন্যতম হোতা। ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার আগ থেকে তাদের খুঁজছিল সিআইডি। এরা হলো পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মহিউদ্দিন রানা এবং ফলিত রসায়ন বিভাগের আবদুল্লাহ আল মামুন। বাকি ১২ ভর্তিচ্ছু  হলেন— নূর মোহাম্মাদ মাহবুব, ফরহাদুল আলম রানা, ইশরাক হোসেন রাফি, আবদুল্লাহ আল মুকিম, রিশাদ কবির, আসাদুজ্জামান মিনারুল, ইশতিয়াক আহমেদ, জয় কুমার সাহা, রেজওয়ানা শেখ শোভা, মাশুকা নাসরীন, তারিকুল ইসলাম এবং নাসিরুল হক নাহিদ। আটককৃতদের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জালিয়াত চক্রের হোতাদের ধরতে আগে থেকেই কাজ করছিল। তারই সূত্র ধরে জালিয়াত চক্রের তিন হোতাকে কার্জন হল এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ঘ-ইউনিটে ১ হাজার ৬১০টি (বিজ্ঞানে- ১১৪৭টি, বিজনেস স্টাডিজে- ৪১০, মানবিকে- ৫৩টি) আসনের বিপরীতে মোট ৯৮ হাজার ৫৪ জন ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরের ৮৬টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সেই হিসেবে প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছে ৬১ জন।

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা ১২ জনের কারাদণ্ড: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির প্রক্সি ও ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগে ১২ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকালের এ অভিযানে প্রত্যেককে এক মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহীদ এলাহী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ, সহকারী প্রক্টর মো. সোহেল রানা, ড. এ কে লুতফুল কবীর, অধ্যাপক মাইনুল ইসলাম, অধ্যাপক রবিউল ইসলাম প্রমুখ। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন কিশোরগঞ্জের ইশতিয়াক আহমেদ, গাইবান্ধার আবদুল্লাহ আল মুকিম ও মোহাম্মদ রিশাদ কবির; পাবনার মিরাজ আহমেদ; বগুড়ার জয় সাহা; কুমিল্লার নূর মোহাম্মদ মাহবুব, রেজোয়ানা শেখ শোভা ও মাসুকা নাসরিন রোজা; ময়মনসিংহের তারিকুল ইসলাম; রংপুরের নাসিরুল হক নাহিদ; ফরিদপুরের এম ডি ফারহাতুল আলম রাফি ও নাটোরের মো. মিনারুল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহীদ এলাহী জানান, মাস্টারকার্ডের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে সিম কার্ড ঢুকিয়ে কেন্দ্রের বাইরে যোগাযোগ করে উত্তর সংগ্রহের সময় ১২ জনকে ধরা হয়। এ সময় তাদের কানে ঢোকানো ছিল অতিক্ষুদ্র তারবিহীন হেডফোন। কয়েক বছর ধরে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ পরিচালিত সরকারি-বেসরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সন্তোষজনক ফল পাওয়া যাচ্ছে।

ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার মহিউদ্দিন রানাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রানা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক। গতকাল বিকালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাকে বহিষ্কার করেছে।

 ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সূত্র জানায়, গতকালের ওই আটকের ঘটনার পরই তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত মহিউদ্দিন রানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে শহীদুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র।

সর্বশেষ খবর