রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

লালমনিরহাট সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা

এক যুগ পর মাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কেঁদেছি। মাকে জড়িয়ে ধরতে পারব তা কখনো ভাবিনি। মা আমাকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছেন। কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার আগে বাংলাদেশে বিয়ে হওয়ার পর থেকে বাবার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার মধ্য গড্ডিমারী গ্রামের ইন্দ বালা (৩৫)। কালীপূজা উপলক্ষে মা চিত্র বালা (৬০) ভারতের ডাকুয়াটারী থেকে এসেছেন মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে। মেয়েকে পেয়ে আত্মহারা হয়ে পড়েন তিনিও। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কালীপূজা উপলক্ষে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা সীমান্তে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মিলনমেলা। গতকাল বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতীয় কাঁটাতারের গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের শত শত নারী-পুরুষ তাদের ভারতে থাকা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কালীপূজা উপলক্ষে কাঁটাতারের গেট খুলে দেওয়ার পাশাপাশি পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ও জোংড়া ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর সীমান্তে দুই দেশের মানুষ আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। এ সময় নিকটাত্মীয়দের কাছে পেয়ে উভয় দেশের অনেককেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। স্থানীয়রা অনেকে বলছেন, বিজিবি-বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া খুলে দেওয়ায় দুই দেশের মানুষ তাদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন। এভাবে প্রতিবছর বিশেষ দিনগুলোয় মিলনমেলার আয়োজন করলে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক আরও মধুর হবে। পাটগ্রাম উপজেলার মমিনপুর এলাকার সতিশ চন্দ্র বলেন, ভারতে মেয়ে থাকায় এক নজর দেখার জন্য স্ত্রীসহ ছুটে এসেছি। পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের বিলাশ (২৬) বলেন, কাঁটাতারের বেড়া খুলে দেওয়ার খবর পেয়ে আমি সীমান্তে ছুটে আসি। কালীপূজা উপলক্ষে বিএসএফ  খিচুড়ি খেতে দেয়। সেখানে দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলায় পরিণিত হয়। রংপুর-৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল মাহফুজ-উল-বারী বলেন, উভয় দেশের মানুষ কাঁটাতারের বেড়ার পাশে জড়ো হয়ে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উভয় দেশের লোকজন সীমান্ত ত্যাগ করেছেন।

সর্বশেষ খবর