শিরোনাম
রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশনে প্রতিনিধিত্ব চায় গ্রামীণ ব্যাংক

সংশোধন হচ্ছে বিধিমালা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচনে সরকার যে বিধিমালা করেছে তার সংশোধন চেয়ে প্রতিষ্ঠানটি সরকারকে বলেছে, নির্বাচনের লক্ষ্যে যে কমিশন গঠন করা হবে সেখানে যেন তাদের প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়।

বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ। বাকি দুই সদস্যের একজন হবেন ক্ষুদ্রঋণ পরিচালনাকারী সরকারের সংস্থা পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) একজন ডিএমডি এবং সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একজন ডিএমডি পদ মর্যাদার কর্মকর্তা। এরা সবই সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন। গ্রামীণ ব্যাংক বলছে, নিজেদের পরিচালক নির্বাচন নিয়ে কমিশন গঠনের বিধান হলেও সেখানে তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। সে কারণে তারা বিধিমালার সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধন চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। গত মাসে এই চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠি পাওয়ার পর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সচিব ইউনুছুর রহমান এবং গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান খন্দকার মোজাম্মেল হক সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও করেছেন। সেখানে অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে একটি গাইড লাইন দেয়। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুছুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ নিয়ে আমরা সম্প্রতি বৈঠক করেছি। অর্থমন্ত্রী আমাদের একটি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ব্যাংকিং বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এখন এ বিষয়ে ভেটিংয়ের জন্য প্রস্তাবটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ভেটিং শেষে বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রতিষ্ঠাতা এমডি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রত্যাহারের পর ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নির্বাচনে একটি বিধিমালা তৈরি করে সরকার। ক্ষুদ্রঋণে শান্তিতে নোবেলজয়ী এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত পরিচালকদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৫ সালে। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত ৯ পরিচালকের মেয়াদ শেষ হয়। সে অর্থে ব্যাংকটিতে এখন শুধু চেয়ারম্যানসহ সরকারের তিন পরিচালক রয়ে গেছেন। এ ক্ষেত্রে যতদিন নির্বাচন না হবে ততদিন মেয়াদোত্তীর্ণ পরিচালকরাই দায়িত্বে থাকবেন বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে দাবি করা হচ্ছে। তবে সরকার সেই দাবি না মেনে বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালক নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়। নির্বাচিত পরিচালকরা তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আদালতে রিট মামলা দায়ের করেন। সেই থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচন আটকে আছে। তবে এ বছরের আগস্টে গ্রামীণ ব্যাংকের সরকার নিয়োজিত চেয়ারম্যান খন্দকার মোজাম্মেল হক অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নির্বাচনের তাগাদা দেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যমান নির্বাচিত পরিচালকগণ বিধিমালা, ২০১৪ এর ৫(১) উপবিধি অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদে তাদের সদস্যপদ বহাল আছে বলে দাবি করছেন। এতে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময় পূর্ণাঙ্গ বোর্ড না থাকলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ আটকে থাকে এবং সার্বিক কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।’ এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে তার বাসভবনে ৬ আগস্ট গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় : সরকার নিযুক্ত তিন পরিচালকের সমন্বয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভা আহ্বানে অ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত নেওয়ার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৭ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয়ে চিঠি পাঠায় গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান।

সর্বশেষ খবর