সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মানবতার আড়ালে আছে বড় সংকট

---—এ কে আজাদ

মানবতার আড়ালে আছে বড় সংকট

মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়া হলেও, এর আড়ালে আগামী দিনগুলোতে তাদের নিয়ে ভয়াবহ সংকট মোকাবিলা করতে হবে বাংলাদেশকেই। এমনটাই মনে করেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। তিনি সংকট উত্তরণে ভারতকে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের সব সুপারিশ বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান করা হোক। বিদেশে অবস্থানরত এ কে আজাদ গতকাল  বাংলাদেশ প্রতিদিনকে টেলিফোনে আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো কোনো সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে না। আমি মনে করি, তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। রোহিঙ্গা শিশুদের মায়ের সামনে হত্যা করা হচ্ছে। তাদের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। তাই জীবন বাঁচানোর তাগিদে তারা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। এই অবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ছিল। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করেছি। এখন বিশ্ব নেতাদের নৈতিক দায়িত্ব বাংলাদেশের পাশে থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কাজটি সফল করা। দেশের এই শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের খাবারটুকো রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খাব। আমাদের ১৬ কোটি মানুষের সঙ্গে যদি ১০ লাখ অতিরিক্ত রোহিঙ্গা থাকেন, তাহলে সেটুকো আত্মত্যাগ আমরা করতে পারব। আবার আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেব। পাশে থাকব। সবই ঠিক। পাশাপাশি আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে কূটনৈতিকভাবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। তাদের যেন পৃথক নিরাপদ এলাকা তৈরি করা হয়। এ বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে হবে। এফবিসিসিআইর সাবেক এই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি আমাদের জনগণকেও সজাগ থাকতে হবে।

 রোহিঙ্গারা যেন সন্ত্রাসী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াতে না পারে, সেই বিষয়ে সরকার সজাগ আছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গারা যাতে অন্য স্থানে চলে যেতে না পারে, সেই দিকেও নজরদারি রাখতে হবে। এ কে আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। আমরাও প্রতিদিন যে দৃশ্য দেখছি, তাতে নিজেরাও খুব আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি। আমরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছি। প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি মনে করি, এই সাহায্যের হাত অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সাহায্যও যাতে আসে, সেই দিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। তবে আমরা খুবই মর্মাহত হচ্ছি, মুসলিম দেশগুলোর অনেকে বড় বড় দেশ সৌদি আরব, কাতারসহ অনেকে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে মুখ খুলছেন না। কোনো সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছেন না। আমি মনে করি, তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। যেভাবে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক আসছে। সেভাবে সৌদি আরবসহ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো এগিয়ে আসছে না।

সর্বশেষ খবর