বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
টাকা না পেয়ে হত্যা

যশোরে ১৬ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

অপহরণের পর দাবিকৃত ঘুষের টাকা না পেয়ে ছেলেকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে সন্দেহে ১৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে অভিযোগ (পিটিশন) করেছেন হীরা খাতুন নামের এক মহিলা।

 বিচারক শাহিনুর রহমান অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।  মামলায় যশোর কোতোয়ালি থানার তিনজন সাব-ইন্সপেক্টর, চারজন অ্যাসিসটেন্ট সাব-ইন্সপেক্টর এবং নয়জন কনস্টেবলকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের অনেকেই বর্তমানে অন্যত্র কর্মরত। বাদী যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা হীরা খাতুন আদালতকে জানান, গত ৫ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে তার একমাত্র পুত্র সাইদ ও সাইদের বন্ধু শাওনকে যশোর শহরের পৌর পার্ক থেকে আটক করে পুলিশ। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন যে পুলিশ গাড়িতে করে সাইদ ও শাওনকে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় তিনি দৌড়ে গাড়ির কাছে যান ও এসআই শহিদুল ইসলামের কাছে ছেলেকে আটক করার কারণ জানতে চান। তখন এসআই শহিদুল ইসলাম তাকে এ ব্যাপারে থানায় গিয়ে কথা বলতে বলেন। কিন্তু থানার সামনে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকলেও পুলিশ তাকে থানায় ঢুকতে দেয়নি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুজন সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম ও আমির হোসেন তাকে ডেকে ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না পেলে দুজনকে মেরে লাশ গুম করে দেওয়ারও হুমকি দেন। এ ঘটনার এক দিন পর ৭ এপ্রিল পত্রিকা মারফত তিনি জানতে পারেন যে তার ছেলে ও শাওন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় যান। কিন্তু সেখানে কোনো তথ্য  পেলেন না। পরে জানতে পান যে, ‘সাইদ ও শাওন পালিয়ে গেছে জানিয়ে পুলিশ ৬ এপ্রিল একটি মামলা করেছে, এরপর ছেলেকে উদ্ধারের জন্য তিনি বারবার থানায় গেলেও আসামিরা  তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফিরিয়ে দেয়। কোনো উপায় না পেয়ে গত ৩০ মে তিনি সংবাদ সম্মেলনও করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত ছেলে ও ছেলের বন্ধুর কোনো সন্ধান তিনি পাননি। হীরা খাতুনের সন্দেহ তাদের দুজনকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ, ঘুষ দাবি এবং ঘুষ না পেয়ে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে বলে তিনি সন্দেহ করছেন। বাদী হীরা খাতুনের আইনজীবী অজিত কুমার দাস বলেন, আদালত বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করেছেন এবং এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

 যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ এ মামলা প্রসঙ্গে বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। একটি কুচক্রীমহল পুলিশের ভাবমূতি ক্ষুণ্ন করতেই পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলছে।

সর্বশেষ খবর