রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
তদন্ত প্রতিবেদন

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগে জড়িত ছাত্রলীগের ২৯ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাস পোড়ানোর ঘটনায় ছাত্রলীগের ২৯ নেতা-কর্মীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। গত বুধবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর গতকাল অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম উম্মে সারাবন তহুরা আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তদন্তে যে ২৯ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন— সিলেট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও বর্তমানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থ, আবু সরকার (বহিরাগত, শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মৃদুল কান্তি সরকার, কামরুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, বাবলা, মো. আতিকুর রহমান, লায়েক আহম্মেদ, সিদ্দিক আহম্মেদ ইউসুফ, জহিরুল ইসলাম, আক্তারুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, আসাদুজ্জামান শাহিন, মোহাম্মদ বিন মামুন বুলবুল, আউলাদ, আছরাফ আহমেদ শিপন, নজরুল ইসলাম, অলিউল্লাহ ওরফে ওলিউর রহমান, খুরশেদ আলম, বাছিদ ওরফে আবদুল বাছিদ, আবদুস সালাম, ইমতিয়াজ রফিক চৌধুরী, আবদুল্লাহ ফারুক, কয়েছ ওরফে কয়েছুজ্জামান তালুকদার, আবু রেহান, রুবেল ও জ্যোতির্ময় দাস সৌরভ।  তদন্তের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ছাত্রাবাস পোড়ানোর মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের জবানবন্দি ফের গ্রহণ করা হয়। ফলে সাক্ষীদের মৌখিক সাক্ষ্য, ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র, জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এটাই প্রমাণিত হয় যে, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছাত্রলীগ ও ছাত্র শিবিরের বিরোধের কারণেই সংঘটিত হয়েছে। প্রথমত ছাত্রলীগের কর্মী উজ্জ্বল আহমদকে ছাত্র শিবিরের কর্মীরা গুরুতর জখম করায় তাত্ক্ষণিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য বিচার বিশ্লেষণে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত বলে পর্যালোচনায় বলা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ছাত্রাবাসে আগুন দিতে গ্যালনে করে পেট্রল ব্যবহার করা হয়। পরে ছাত্রাবাস কক্ষ লুটপাটও হয়। এ ব্যাপারে এক সাক্ষী বলেছেন— ‘ছাত্রাবাস যখন আগুনে পুড়ছিল, তখন রামদা উঁচিয়ে মিছিল করেছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ ছাত্রাবাসের ফটকের সামনে উপস্থিত থাকলেও নীরব ছিল। পরে ছাত্রলীগের একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশও হয় ছাত্রাবাস ফটকে।’ এদিকে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এম এ ওয়াহাব সংবাদ মাধ্যমকে গতকাল জানিয়েছেন, আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা এখনো পুলিশের হাতে পৌঁছেনি। পরোয়ানা হাতে পাওয়া মাত্র আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর