রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বসুন্ধরা লেদার এক্সপোতে শেষ দিনে ক্রেতার ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চামড়াজাত পণ্য প্রদর্শনীর শেষ দিনে ক্রেতার ভিড় ছিল লক্ষণীয়। প্রদর্শনীতে দেশের শীর্ষস্থানীয় চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিয়েছে। সারা দেশ থেকে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এসেছেন এই প্রদর্শনীতে। সেখানে দেশের চামড়াজাত পণ্য, বিশেষ করে জুতার ক্রেতাদের আগ্রহ দেখা গেছে বেশি। আয়োজকরা জানান, প্রদর্শনীতে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড নাইকি, অ্যাডিডাস, টিম্বারল্যান্ড, আলদো, সিয়ার্স, জেনেসকো, স্টিভ ম্যাডেন, হুগো বস, মেসি’জ, স্যান্ডারগারড, ডায়েচম্যান, এবিসি মার্ট, এইচঅ্যান্ডএম ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরাও এসেছেন। ইতিমধ্যে তারা বাংলাদেশ থেকে জুতা কেনা শুরু করেছেন। চামড়াজাত পণ্য খাতের উদ্যোক্তারা জানান, চামড়াজাত পণ্যের বাজারে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চীন থেকে চামড়াজাত পণ্যের কারখানা সরছে। আর বাংলাদেশের জুতা ও ব্যাগ তৈরির সক্ষমতা বাড়ছে। কারণ এই শিল্পের মূল কাঁচামাল দেশেই হয়। বাংলাদেশ মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করছে এবং এ দেশের শুল্কমুক্ত বাজার-সুবিধা আছে। তারা জানান, চামড়াজাত পণ্যের বৈশ্বিক বাজার প্রায় ২২ হাজার কোটি ডলারের। এ বাজারের সিংহভাগ চীনের দখলে। তবে চীনা কোম্পানিগুলো ধীরে ধীরে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন থেকে সরে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের সামনে চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বাজারে হিস্যা বাড়ানোর বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ দেশের সম্ভাবনা দেখে বৈশ্বিক বড় ব্র্যান্ডগুলো পণ্য কেনার জন্য বাংলাদেশে আসছে। বাংলাদেশ লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এলএফইএবি) আয়োজিত চামড়াজাত পণ্যের প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা রপ্তানি বাড়াতে বেশকিছু সমস্যার কথা জানান। চামড়া প্রক্রিয়াকরণে পরিবেশদূষণ, রপ্তানিতে লিডটাইম বা পণ্য তৈরি করে জাহাজিকরণ করতে সময় বেশি লাগে। এ ছাড়া দেশের পণ্যের বৈচিত্র্যের অভাব, শ্রমিকের দক্ষতায় ঘাটতি ও কারিগরি জ্ঞানের অভাব রয়েছে। প্রদর্শনীতে ভারত, চীন, তাইওয়ানসহ বিশ্বের নামকরা চামড়াজাত শিল্পের প্রযুক্তি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, বিকল্প চামড়া প্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল নিয়ে এসেছে। এখানে ফিনিশড চামড়ার পাশাপাশি জুতা, ট্রাভেল ব্যাগ, বেল্ট, মানিব্যাগ, জ্যাকেট, চাবির রিং, কার্ড হোল্ডার ও বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের মেশিনারিজ প্রদর্শিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্যোক্তারা এসেছেন প্রদর্শনীতে। চামড়াশিল্প খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় টেনিন লেদারের মেশিনারি, ম্যানুফ্যাকচারিং ফুটওয়্যার, চামড়াজাত পণ্য, কম্পোনেন্টস, ডাই, কেমিক্যাল, অ্যাকসেসরিজ ও সংশ্লিষ্ট পণ্য প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য মিলিয়ে ১২৩ কোটি ডলার রপ্তানি আয় করেছে; যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ বেশি। চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় ১০০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে সাড়ে ১৩ শতাংশ বেশি। দেশের চামড়ার আরও ৩০ শতাংশ ব্যবহার করে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন করতে পারলে ২০২১ সালে এ খাতে রপ্তানি আয় ৫০০ কোটি ডলার করা সম্ভব।

 

সর্বশেষ খবর