মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
তিন সিটির ইস্যু এখন গৃহকর

ভোটে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা চট্টগ্রামে নানা আলোচনা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) গৃহকর বাড়ানোর প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষের আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠেছে বন্দরনগরী। এই কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হলে তা বাস্তবায়ন হবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ঠিক আগে। তাই এই করের প্রভাব নির্বাচনে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সরকারের একাধিক মন্ত্রী-এমপি। কর বাড়ানোর প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চসিকের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। চসিক সূত্রে জানা যায়, সিটি করপোরেশন করবিধি অনুযায়ী পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়ন করে থাকে। বর্তমানে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে সরকারি-বেসরকারি ১ লাখ ৮৫ হাজার ২৪৮টি হোল্ডিং রয়েছে। দুই দফায় নির্ধারিত হোল্ডিংয়ের বিপরীতে ৮৫১ কোটি ৩০ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫৯ টাকার কর ও রেইটস নির্ধারণ করেছে চসিক। এই তালিকা ৩১ আগস্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই গৃহকরদাতারা এর বিরুদ্ধে নানা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন। প্রথমেই ‘প্রস্তাবিত গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন’ দাবিতে চসিককে চিঠি দিয়েছেন সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এ ছাড়া ‘ধার্যকৃত গৃহকর বাস্তবায়ন হলে আগামী নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে’ এমন শঙ্কা প্রকাশ করে দুই দফা গণমাধ্যমে বিবৃতিও দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন দাবিতে চসিককে চিঠি দিয়েছেন আরেক সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম এবং ‘এক্স কাউন্সিলর ফোরাম’-এর ২২ কাউন্সিলর। এ ছাড়া গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে গৃহকর সুরক্ষা পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম, বর্ধিত গৃহকর প্রতিরোধ কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন। এ ব্যাপারে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘প্রস্তাবিত কর নিয়ে একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা টেকেনি। আইনি কাঠামোর মধ্যেই গৃহকর মূল্যায়ন করা হচ্ছে। ফলে নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়ার শঙ্কা নেই।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্রতিদিন রিভিউ বোর্ড আপিল নিষ্পত্তি করছে। আপিলে করদাতাদের সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সবাই সন্তুষ্ট হয়েই ফিরছেন। তাই এ নিয়ে আর কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়।’ সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম বলেন, ‘নিয়মমতে কর পুনর্মূল্যায়ন করতে হয়। কর আদায় করা না হলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয় না। তবে তা হতে হবে জনবান্ধব। তাই জনগণের স্বার্থ এবং নগরের উন্নয়ন বিবেচনা করে কর মূল্যায়ন করা হোক।’ চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত গৃহকর নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে করদাতাদের আপিল করতে বলা হয়। বুধবার পর্যন্ত চসিকে মোট ৬৩ হাজার ৬৫০টি আপিল জমা পড়ে। রাজস্ব বিভাগের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে একটি রিভিউ বোর্ড দৈনিক ২০০টি করে আপিল নিষ্পত্তি করছে। আরও আটটি বোর্ড গঠিত হবে। তখন মোট নয়টি রিভিউ বোর্ডে দৈনিক এক হাজার ৮০০ আপিল নিষ্পত্তি সম্ভব হবে।’

 

সর্বশেষ খবর