মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
রিজার্ভ চুরি

আরসিবিসিকে জরিমানা করছে ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক

মানিক মুনতাসির

ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনাকে মানি লন্ডারিং অপরাধের সঙ্গে তুলনা করে ব্যাংকো সেন্ট্রাল এনজি ফিলিপিন্স (ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) সে দেশের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) আর্থিক জরিমানা করতে যাচ্ছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ফিলিপাইন এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত সিগন্যাল না পাওয়া সত্ত্বেও অর্থ ছাড় করা মোটেও ঠিক হয়নি। এ ঘটনার সঙ্গে আরসিবিসির যেসব কর্মকর্তা জড়িত, তারা মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ করেছেন। এদিকে অন্য এক সূত্র জানিয়েছে, চুরি হওয়া রিজার্ভের বাকি অর্থ ফেরত পেতে চীন ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। দেশ দুটি মনে করছে, এ ঘটনায় চীন এবং শ্রীলঙ্কার কয়েকজন নাগরিকও জড়িত। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ মনে করছে তদন্ত ও অর্থ ফেরতের ক্ষেত্রে এ দুটি দেশের সহায়তা প্রয়োজন। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অর্থ ফেরত না দিলে ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মামলা করবে। এরই মধ্যে মামলার সব প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফেড এবং ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনই দায়ী। তারা কোনোভাবেই এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দিতে আরসিবিসি এবং ফেড বাধ্য। এমনকি আরসিবিসিকে জরিমানা করেও খোয়া যাওয়া অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব। সূত্র বলছে, এ জন্যই বাংলাদেশ ফেড, ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর ফিলিপাইনের আদালতের রায় অনুযায়ী গত বছরের ১২ নভেম্বর দেড় কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি অর্থ কবে ফেরত পাবে, কিংবা আদৌ পাওয়া যাবে কিনা-এ নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।  এ ছাড়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের বাকি অর্থ কোথায় গেছে, তারও হদিস মেলেনি। ফিলিপাইন সরকার জুয়ার আখড়ার আরও আড়াই কোটি ডলার জব্দ করেছে। ওই অর্থের দাবি বাংলাদেশ করলেও তার সুরাহা হয়নি। তবে এ ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানিয়েছে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা বলেছে, ঘটনা তদন্তাধীন অবস্থায় এ ধরনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে তদন্তকাজ ব্যাহত হতে পারে। সে জন্য সরকার ওই প্রতিবেদন আপাতত প্রকাশ করছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বাংলাদেশ ব্যাংকের গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর অপারেশনাল প্রধান দেবপ্রসাদ দেবনাথ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুই দেশের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি সরকারের একাধিক সংস্থা কাজ করছে। ফিলিপাইন সরকার আমাদের শুরু থেকেই সহযোগিতা করছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তারা দায় নিতে চাইছিল না। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না।

সর্বশেষ খবর