শিরোনাম
বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইকোনমিক জোন পাচ্ছে সৌদি আরব

ডিসেম্বরে আসছে প্রতিনিধি দল

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীদের জন্য এক বা একাধিক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইকোনমিক জোন) বরাদ্দ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশটির একটি প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। ওই প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।

জানা গেছে, সৌদি আরবকে ইকোনমিক জোন বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বেজাকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ওই নির্দেশনা অনুসারে বেজা রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রস্তাবপত্রও পাঠিয়েছে। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, সৌদি বিনিয়োগ নিয়ে দুই পক্ষের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আগামী মাসে যে সৌদি প্রতিনিধি দল আসছে সেই দলটির সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, একটি বা দুটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল শুধু সৌদি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য বরাদ্দ প্রদানের বিষয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করে সৌদি সরকারের বিবেচনার জন্যও পাঠানো হয়েছে। এখন তাদের দিক থেকে সাড়া পেলেই জোন নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বেজার কর্মকর্তারা জানান, চীন, জাপান ও ভারতের বিশেষ বিশেষ শিল্প গ্রুপকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে যেভাবে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সৌদি শিল্প গ্রুপগুলোকেও সেভাবেই উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

ডিসেম্বরে আসছে সৌদি প্রতিনিধি দল : এদিকে, বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরবের সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে প্রতিনিধি দলটির ডিসেম্বরের ৪ তারিখে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চার দিনের (৪-৭ ডিসেম্বর) এই সফরে ওই সময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে সৌদি আরবের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার রূপরেখা চূড়ান্ত করতে এরই মধ্যে একটি প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু। জানা গেছে, সৌদি প্রতিনিধি দলটি পাঁচটি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এগুলো হচ্ছে : কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, ওষুধ ও পেট্রোকেমিক্যাল, বস্ত্র, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং হোটেল ও পর্যটন খাত। সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীরা যাতে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোয় যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ পেতে পারেন সেজন্য বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও আলোচনার সুযোগ রাখা হয়েছে। এফবিসিসিআই, এমসিসিআই ছাড়াও বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বেজার সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করবে সৌদি প্রতিনিধি দলটি। সূত্রগুলো জানায়, সৌদি আরবের বহুজাতিক কোম্পানি আল রাজি, আল বাওয়ানি ও আল জামিল গ্রুপের মতো বিশ্বখ্যাত শিল্প গ্রুপের বিনিয়োগ বাংলাদেশে আনার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। বিনিয়োগে আগ্রহ রয়েছে সৌদি শিল্প গ্রুপগুলোরও। দরকষাকষি চলছে উপযুক্ত জমি ও অন্যান্য অবকাঠামো সুবিধা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়ে দিয়েছে বিনিয়োগের জন্য জমির সমস্যা হবে না। চাইলে শুধু সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য এক বা একাধিক অর্থনৈতিক জোন বরাদ্দ দিতে প্রস্তুত রয়েছে সরকার। গত বছর জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফরের পর দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক নতুন মোড় নেয়। সেখানকার বেসরকারি খাতের পাশাপাশি দেশটির সরকারও এখন বাংলাদেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। পরবর্তিত পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের যে টানাপড়েন চলছে, সেই প্রেক্ষাপটে সৌদি সরকার বিনিয়োগ স্থানান্তরের বিষয়ে ভাবছে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তারা অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ ছাড়া সৌদি আরবের নেতৃত্বে নিরাপত্তাসংক্রান্ত জোটে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার বিষয়টিও সৌদি সরকারকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আস্থা জোগাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারের সূত্রগুলো। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। সবকিছু মিলে গেলে সৌদিরা এখানে বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ নিশ্চিত করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর