শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

তরুণ উদ্যোক্তাদের বাজিমাত

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

তরুণ উদ্যোক্তাদের বাজিমাত

খুলনা মহানগরীর ব্যস্ততম সড়ক মজিদ সরণি। শিববাড়ি মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন ফ্যাশন হাউস ও মানসম্মত রেস্তোরাঁ। একই ধরনের শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে নগরীর আহসান আহমেদ রোড, পিটিআই মোড়, কেডিএ এভিনিউ, নিউ মার্কেট ও দৌলতপুর এলাকায়। এগুলো পরিচালনায় জড়িত তরুণ ব্যবসায়ীরা।

লাভজনক হওয়ায় এ ব্যবসায় তাদের বিনিয়োগ বেড়ে চলেছে।

অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস ও ফ্যাশনে এসেছে পরিবর্তন। দৈনন্দিন চাহিদাকে লক্ষ্য রেখে খুলনায় গড়ে উঠেছে এসব ফ্যাশন হাউস ও মানসম্মত রেস্তোরাঁ। এগুলোর ব্যাপারে খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস বলেন, নানামুখী সংকটে খুলনায় শিল্পখাতে স্থবিরতা থাকলেও হোটেল-রেস্তোরাঁ ও ফ্যাশন হাউস ব্যবসা এখন বেশ জমজমাট। গত দুই বছরে খুলনায় এ ধরনের কয়েকশ’ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এই খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে প্রচুর। সেই সঙ্গে পাল্টে গেছে ব্যবসার ধরনও। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যে উন্নতি হয়েছে তার জেরেই আধুনিক ও মানসম্পন্ন রেস্তোরাঁগুলো ভালো ব্যবসা করছে। সরেজমিন দেখা গেছে, খুলনায় দিন দিন বাড়ছে ফ্যাশন হাউস ও রেস্তোরাঁ ব্যবসার প্রসার। সাধ ও সাধ্যের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে গড়ে উঠছে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান। অনেকে পরিবার নিয়ে হোটেল রেস্টুরেন্টে গিয়ে নিয়মিত ভিন্ন স্বাদের খাবার খেতে পছন্দ করেন। তরুণ উদ্যোক্তা মেহেদী মাসুদ খান জানান, এই ব্যবসায় তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। আগে খুলনায় হাতে গোনা কয়েকটি ব্র্যান্ডশপ ছিল। মানসম্পন্ন বা দামি হোটেল-রেস্তোরাঁ খুঁজে পাওয়া যেত না। এখন বহু তরুণ উদ্যোক্তা একক বা যৌথভাবে এই ব্যবসাকে আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। তারা সাফল্যও পাচ্ছেন। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন মাত্রার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ।

নানামুখী সংকট : তবে সম্ভাবনা থাকলেও উদ্যোক্তাদের প্রায়শই নানা সংকটের মুখোমুখি হতে হয়। তরুণ বিনিয়োগকারী মাসুম বিল্লাহ সোহাগ জানান, ভালো লোকেশনে এই ব্যবসা করতে গেলে চড়া হারে ভাড়া গুনতে হয়। ডেকোরেশনেও অনেক খরচ। কর্মচারীদের বেতন ও প্রফেশনাল কুকের জন্য অনেক খরচ। কিন্তু এই ব্যবসায় ব্যাংক ঋণের সুবিধা একেবারে সীমিত। ভ্যাটের হারও চড়া। উদ্যোক্তারা জানান, ১৫ শতাংশ ভ্যাট এটা খুব বেশি। ব্যাংক ঋণের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং ভ্যাট কমানো হলে এই খাত বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানে ব্যাপক সুবিধা তৈরি করবে।

কারিগরি সহায়তা : তরুণ এসব উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো। খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস জানান, তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ বা সেমিনারের আয়োজন করা হবে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করার পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যুব উন্নয়ন অধিদফতর খুলনার সহকারী পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, তরুণ উদ্যোক্তাদের নির্দিষ্ট ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রকল্প গ্রহণের জন্য তাদের কারিগরি সহায়তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর