শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে আফিল না লিটন বিএনপিতে অর্ধডজন প্রার্থী

সাইফুল ইসলাম, যশোর

আওয়ামী লীগে আফিল না লিটন বিএনপিতে অর্ধডজন প্রার্থী

যশোরের সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-১ সংসদীয় আসনটি নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল। দেশের আমদানি- রপ্তানি বাণিজ্যের একটি বড় অংশই এ বন্দর দিয়ে হয়। এ বন্দর থেকে সরকার যেমন বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে, তেমনি হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে। আর সে কারণেই শার্শা উপজেলার চেয়ে দেশের মানুষ বেনাপোলকেই বেশি চেনে। বিগত ১০টি সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ পাঁচবার, বিএনপি তিন, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী একবার করে জয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা তবিবর রহমান সর্দার একাই তিনবার অর্থাৎ ১৯৭৩, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর শিল্পপতি শেখ আকিজ উদ্দিনের ছেলে শেখ আফিল উদ্দিন গত দুই মেয়াদ ধরে এ আসনে সংসদ সদস্য আছেন। বিএনপি থেকে আলী তারেক ১৯৭৯ সালে, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে মফিকুল হাসান তৃপ্তি এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে আলী কদর এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া জামায়াত প্রার্থী নূর হোসেন ১৯৮৮ সালে এবং জাতীয় পার্টি প্রার্থী নজরুল ইসলাম ১৯৮৬ সালে এখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শিল্পপতি শেখ আফিল উদ্দিন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হলেও এবার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নিজ দলের মধ্যেই কঠিন লড়াইয়ে নামতে হতে পারে তাকে। কারণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন এবার দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাসপোর্ট অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক আবদুল মাবুদও। তিনি এলাকায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত শেখ আফিল উদ্দিন এবং আশরাফুল আলম লিটনের মধ্যেই মনোনয়ন পাওয়ার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। জাতীয় পার্টির শার্শা উপজেলা কমিটির সভাপতি ডাক্তার আক্তার হোসেনও এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। বিএনপির অন্তত হাফ ডজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। ওয়ান-ইলেভেনের পর দল থেকে বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তির দলে ফেরা না ফেরার ওপরও নির্ভর করছে অনেক কিছু। বিএনপির কয়েকটি সূত্র দাবি করেছে, তৃপ্তির দলে ফেরা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। যদি তাই হয়, তাহলে এ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হতে তিনি জোর চেষ্টা করবেন। যশোর নগর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলামও এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মহসিন কবীর, শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, সাধারণ সম্পাদক হাসান জহির এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নূরুজ্জামান লিটনও দলীয় মনোনয়ন নিয়ে এ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এর আগে এ আসনটি বিএনপি তাদের জোটের শরিক জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছিল। সেক্ষেত্রে এবারও জামায়াত জোটের কাছে এ আসনটি দাবি করবে। জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা আজিজুর রহমান জোটের প্রার্থী হতে চাইবেন বলে জানা গেছে। এদিকে জোটের শরিকদের আসন ছাড়ার ব্যাপারে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। এর আগে যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিই বিএনপি শরিকদের ছেড়ে দিয়েছিল। এ আসনগুলো বার বার শরিকদের ছাড়ার কারণে ওই এলাকাগুলোতে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। তাই এবার আর এসব আসন শরিকদের দিতে চান না স্থানীয় নেতারা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর