শিরোনাম
শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজধানীতে নব্য জেএমবির তিন সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মহাখালী থেকে নব্য জেএমবির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন আবদুস সামাদ ওরফে আরিফ মামু ওরফে আশিক ও তার শ্বশুর জিয়াদুল ইসলাম এবং আজিজুল ইসলাম ওরফে মেহেদী হাসান ওরফে শিশির। এদের মধ্যে সামাদ নব্য জেএমবির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তামিম চৌধুরীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এসব কথা জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন সময় নব্য জেএমবির উচ্চপর্যায়ের নেতারা গ্রেফতার ও নিহত হলে এই সামাদের নেতৃত্বেই জঙ্গি সংগঠনটি সংগঠিত হয়। বুধবার রাতে মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি নাইনএমএম পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও ২০০ ডেটোনেটর উদ্ধার করা হয়েছে। তামিম চৌধুরী-সামাদ কল্যাণপুর ও মিরপুরে প্রায় ডজনখানেক জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প খুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ গ্রেফতার হওয়ার পর সামাদই সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। গ্রেফতার মেহেদী পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুই বছর ধরে জঙ্গি কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। জিহাদি প্রশিক্ষণও নিয়েছেন মেহেদী। সামাদের শ্বশুর জিয়াদুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নব্য জেএমবির জন্য অস্ত্র-বিস্ফোরক ও ডেটোনেটর সংগ্রহের পাশাপাশি সংরক্ষণ ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করতেন। দিনাজপুরের সামাদ ২০০২ সালে দাওরা হাদিস এবং ২০১১ সালে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ২০১০ সালে তিনি জেএমবিতে যোগ দেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে মিলে ‘জুনদ আল তাওহিদ আল খিলাফাই’ নামে একটি সংগঠন গড়েন সামাদ। তামিম ছিলেন সংগঠনটির প্রধান, আর সামাদ সেকেন্ড ইন কমান্ড। বোমা তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে পারদর্শী সামাদ সংগঠনের জন্য সদস্য ও অর্থ সংগ্রহের পাশাপাশি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতেন। এ ছাড়া অস্ত্র চালনা ও গ্রেনেড ব্যবহারের বিষয়ে সংগঠনের নবীন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন সামাদ। নব্য জেএমবির উচ্চপর্যায়ের নেতারা বিভিন্ন সময় গ্রেফতার ও নিহত হওয়ার পর তার নেতৃত্বে সংগঠনটির কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ হয়। নব্য জেএমবির অস্ত্র সরবরাহকারী ছোট মিজান ও সোহেল মাহফুজের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে আনা অস্ত্র ও ডেটোনেটরগুলো জিয়াদুল তার মাছের খামারে লুকিয়ে রাখতেন। নব্য জেএমবির সদস্য সংখ্যা জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, নব্য জেএমবির হাজার হাজার সদস্য ছিল না। হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়ার ঘটনার বাইরে একজনেরই এক থেকে সর্বোচ্চ ২২টি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

হলি আর্টিজান হামলা-পরবর্তী সময়ে এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন নব্য জেএমবির সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযানে প্রায় ৮০ জন মারা গেছে। তবে সংগঠনটি এখন বিপর্যস্ত। তাদের নতুন কোনো ঘটনা ঘটানোর ক্ষমতা নেই।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর