শনিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাহাড়ে বিদ্যুতের আলো

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

পাহাড়ে বিদ্যুতের আলো

একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়ন নিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা। হাওর ও পাহাড়বেষ্টিত এ উপজেলায় আছে ১৮৭টি গ্রাম। এর মধ্যে চা-বাগান অধ্যুষিত পাহাড় এলাকার গ্রামগুলোতে বয়েছে বিপুলসংখ্যক চা-জনগোষ্ঠীর বসবাস। পাহাড়ে টিলায় টিলায় বসবাস করছে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী খাসিয়া, মন্ডা, সাঁওতাল ও গৌর সম্প্রদায়। দীর্ঘদিন ধরে তারা বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাও তাদের কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু বর্তমান সরকার তাদের ২০০৮ সালের দেওয়া নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই অন্ধকারে থাকা এ উপজেলার বিপুল জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করে তুলছে। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা দুর্গম এলাকা বর্মাছড়া, উদরাছড়া, হরিণছড়া, জাম্বুরাছড়া, টিপরাছড়া,  শিশেলবাড়ী ও ডলুছড়া পাহাড়ি জনবসতিতেও পৌঁছে গেছে বিদ্যুতের আলো। মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দফতর থেকে জানা যায়, এ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনতে ১ হাজার ৪৯২ কিলোমিটার নতুন লাইন টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয় ১৫ লাখ টাকা করে। সমিতির তথ্যানুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এ উপজেলার ১ হাজার ২৬৮ কিলোমিটার নতুন লাইন টানা হয়েছে। বাকি রয়েছে ২২৪ কিলোমিটার লাইন। ১৮৭টি গ্রামের মধ্যে ১৭৬টিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। বাকি ১১টি গ্রামে সংযোগের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এ পর্যন্ত মোট সংযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৩৫টি। নিরালা পুঞ্জির সহকারী হেড ম্যান দিগন্ত পসুয়েট খাসিয়া বলেন, ‘বিদ্যুৎ আসার পর থেকে আমদের জীবনযাত্রা অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ছেলেমেয়েরা এখন বিদ্যুতের আলোয় লেখাপড়া করতে পারছে। পানির সুবিধা হয়েছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের সব সুবিধাই এখন আমরা পাহাড়ে বসে ভোগ করতে পারছি।’ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন তালুকদার বলেন, পাহাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় ওইসব এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে এখন কম্পিউটার প্রদান করা হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সন্তানরা বিদ্যালয়ে বসেই এখন কম্পিউটার শিখতে পারবে। মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী শিবু লাল বসু বলেন, ‘ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছি। মার্চের মধ্যে এ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হবে।’ স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ বলেন, পাহাড়ি এলাকার নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী আজ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে। জনবান্ধব এ সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর