শনিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ছাত্রলীগের সংঘর্ষে পাবনা মেডিকেল বন্ধ ঘোষণা

পাবনা প্রতিনিধি

ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার ও সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে পাবনা মেডিকেল কলেজে (পামেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমান সাধারণ সম্পাদকসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বেলা ২টার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশও দিয়েছে কলেজ প্রশাসন।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, পাবনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি মাহফুজুর রহমান নয়ন মেডিসিন ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক অদ্বিতীয় দের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে রোটারি ক্লাব গ্রুপ। নতুন শিক্ষার্থীদের বরণকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ক্যাম্পাসে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন— মেডিকেল কলেজের সাবেক সভাপতি আবু তোরাব মিম, বঙ্গবন্ধু হলের সাংগঠনিক সম্পাদক, মশিউর রহমান, উপ যুগ্ম-সম্পাদক জয়দেব কুমার সূত্রধর, সদস্য নির্ঝর, সাগর আহম্মেদ প্রমুখ।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী জানান, ক্লাব বা সমিতির নামে ছাত্রনেতারা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে অনুষ্ঠানের নামে ভাগবাটোয়ারা করে খায়। মূলত এই চাঁদা নেওয়া নিয়েই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পাবনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অদ্বিতীয় দে বলেন, আমরা নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিতিমূলক সভা করছিলাম। এ সময় কিছু জুনিয়র শিক্ষার্থী সিনিয়র মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। আমরা উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করি। কিছুক্ষণ পরেই তারা সশস্ত্র অবস্থায় আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের সিনিয়র ভাইসহ ৭/৮ জন আহত হন।

 পাবনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান নয়ন বলেন, কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী সঙ্গে নিয়ে অদ্বিতীয় দের লোকজন আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এরই প্রতিবাদ জানালে আমাদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আমাদের নয়জন আহত হয়। ঘটনার বিষয়ে পাবনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ রিয়াজুল হক বলেন, আমি ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ছাত্ররা এই ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুনাম নষ্ট করবে এটা মেনে নেওয়া হবে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাবনা মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বেলা ২টার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের ৩টি হল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি, যারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে যাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা রয়েছে, তাদের প্রবেশপত্র দেখা সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে দেওয়া হবে। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক জানান, ভোররাত থেকে পাবনা মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ক্যাম্পাসসহ হাসপাতাল চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। কলেজ অধ্যক্ষ আরও জানান, এই ঘটনায় মেডিসিন বিভাগের প্রধান আবু মোহাম্মদ শাফিকুল হাসানকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর