মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে লতিফ বিশ্বাস বিএনপিতে আলীম

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

আওয়ামী লীগে লতিফ বিশ্বাস বিএনপিতে আলীম

যমুনার কোলঘেঁষা তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী ও এনায়েতপুরের একাংশ) আসনে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে। এখানে প্রবীণদের পাশাপাশি নবীনরাও নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুস্থদের নানা রকম সহযোগিতা করছেন। আসনটিতে বিএনপি থেকে পাঁচজন এবং আওয়ামী লীগ থেকে চারজন প্রচারণায় রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, বেলকুচি-চৌহালীতে আবদুল লতিফ বিশ্বাস অনেক উন্নয়ন করেছেন। বেলকুচির নদী ভাঙন রোধসহ তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ এলাকায় নারীদের শিক্ষিত করতে নিজ উদ্যোগে তিনি বেলকুচি বহুমুখী মহিলা ডিগ্রি কলেজসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেছেন। ২০০৯ সালে তিনি মত্স্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রী হয়ে বেলকুচির অজপাড়া গাঁয়ে ভেটেরিনারি কলেজ, মত্স্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন হ্যাচারি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন, কামারখন্দ-বেলকুচি সংযোগ ব্রিজ, সয়দাবাদ-এনায়েতপুর সড়ক নির্মাণ করেন। ২০১৪ সালে আবদুল লতিফ বিশ্বাসের স্থলে শিল্পপতি আবদুল মজিদ মণ্ডল মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। তবে নানা কারণেই মজিদ মণ্ডল এলাকায় বিতর্কিত হয়ে পড়েন। এবার নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মাঠে নেমেছেন। আর বর্তমান এমপি আবদুল মজিদ মণ্ডল তার ছেলে আবদুল মোমিন মণ্ডলকে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামিয়েছেন। এ নিয়ে বেলকুচি-চৌহালী আসনে আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আসনটিতে এ দুজন ছাড়াও বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন মনোনয়ন পেতে তিন বছর ধরে মাঠে নেমেছেন। আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মোহন মনোনয়ন প্রত্যাশী। বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফজী খান বলেন, বেলকুচিতে বিএনপির বাঘের মতো প্রার্থীর সঙ্গে লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের বাঘ লতিফ বিশ্বাসের বিকল্প নেই। চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু নজির মিয়া বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই কাজ করব। সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ বিশ্বাস জানান, আগামীতে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হলে সারা দেশে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত ও বেগবান করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন। বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে বিএনপি প্রার্থী মেজর (অব.) মনজুর কাদের আওয়ামী লীগের প্রার্থী লতিফ বিশ্বাসের কাছে হেরে যান। তারপর থেকে তিনি ঢাকায় চলে যান। কালেভদ্রে এলেও দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন না। এরপর বেলকুচি-চৌহালী ও এনায়েতপুর একাংশ বিএনপির হাল ধরেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম এবং জেলা বিএনপির সহসভাপতি রকিবুল করিম খান পাপ্পু। দুজন পৃথক পৃথকভাবে দলের কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মামলা-হামলার শিকার নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে সাধ্যমতো সহযোগিতা করছেন। এলাকা ও কেন্দ্রে আলিম বেশ জনপ্রিয়। তিনিই দলের সম্ভাব্য প্রার্থী। তবে আলীম ও পাপ্পু দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় বিএনপি। সাবেক এমপি  মেজর (অব.) মনজুর কাদের দলের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করলেও তিনি শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে সময়মতো হাজির হবেন বলে নেতা-কর্মীরা মনে করেন। এ ছাড়া বেলকুচি উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মওলা খান বাবলু ও চৌহালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন মনোনয়ন পেতে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সাবেক ছাত্রনেতা আমিরুল ইসলাম খান আলীম বলেন, উদার গণতন্ত্র, শোষণ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ এবং আত্মনির্ভশীল জাতি গঠন আমার অঙ্গীকার। জোটগত নির্বাচন হলে জামায়াতে ইসলামী বিএনপি প্রার্থীকেই সমর্থন জানাবে বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। বেলকুচিতে জামায়াতের ভিত খুবই শক্তিশালী, দলটির প্রায় ৫০ হাজার ভোট রয়েছে।

সর্বশেষ খবর