শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিশুপ্রহর দিয়ে ছুটির দিনের বিকিকিনি

মোস্তফা মতিহার

শিশুপ্রহর দিয়ে ছুটির  দিনের বিকিকিনি

ছুটির দিনে শিশুদের উৎসবে গতকাল মুখর হয়ে উঠেছিল বইমেলা প্রাঙ্গণ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

অমর একুশে গ্রন্থমেলার দ্বিতীয় দিনে শিশু প্রহর দিয়ে শুরু হয় মেলার বিকিকিনি। ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলায় ছিল বইপ্রেমীদের আনাগোনা। এদিন উপচেপড়া ভিড় না থাকলেও যেটুকু ছিল তা আশাব্যঞ্জক। বিকালেও যে ধরনের ভিড় থাকার কথা সে ধরনের ভিড় ছিল না। তবে অন্যান্য বছরের দ্বিতীয় দিনের তুলনায় গতকাল ভিড় ছিল উল্লেখ করার মতো। এদিন মেলায় আগতরা ঘোরাঘুরি, সেলফি তোলা ও স্টলে ঘুরে ঘুরে নতুন বইয়ের তালিকা সংগ্রহ করার মধ্যে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। তবে শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, দ্বিতীয় দিন হিসেবে বিকিকিনিতে তারা সন্তুষ্ট। ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্ণধার আরিফুর রহমান নাঈম বলেন, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার মেলা বেশি সফলতা পাবে। অন্য বছরগুলোতে ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে মেলা যতটুকু এগিয়ে যায়, এবার প্রথম সপ্তাহেই মেলা ততটুকু এগিয়ে যাবে। অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, বিক্রি মোটামুটি ভালো, তবে এ ধারা অব্যাহত থাকলে এবারের মেলা অন্যান্যবারের তুলনায় বেশি সফলতা পাবে। গতকাল প্রথম শুক্রবারের প্রথম ছুটির দিন মেলার প্রবেশদ্বার খোলা হয় সকাল ১১টায় এবং আধা ঘণ্টা সময় বৃদ্ধির কারণে মেলা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন ছিল মেলার প্রথম শিশু প্রহর। ফলে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুরন্তপনায় মেতে ওঠে শিশুরা। বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশুকর্নারে শিশুদের স্টলগুলোতে ঘুরে বেড়ানো আর সিসিমপুরে দুষ্টুমিতে মেতে থাকে ছোট্ট সোনামনিরা। তাদের আবদার রাখতে গিয়ে পছন্দের বইটিও কিনে দেন অভিভাবকরা।

উড়ছে ধুলা : কিছু অব্যবস্থাপনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বইপ্রেমীরা। মাত্রাতিরিক্ত ধুলো, ফোয়ারা চালু না করা, স্টল নির্মাণের সামগ্রী যেখানে সেখানে পড়ে থাকা, ২৪টি টয়লেট স্থাপন করা ও মেলায় ১২ জন ব্যক্তির নামে ১২টি চত্বর থাকার কথা থাকলেও বিগত বছরগুলোর মতো এবারও কথা রাখেনি বাংলা একাডেমি। নানা অব্যবস্থাপনার বিষয়ে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মেলা শেষ হওয়ার পর পানি ছিটানো হয়েছে। গতকাল ছুটির দিনের কারণে নিয়মানুযায়ী সকাল ১১টায় মেলা শুরু হয়। যার কারণে ধুলো উড়ছে। বিকালে মেলা শুরু হলে ধুলা আর উড়ত না। তবে রবিবার থেকে ধুলার সমস্যা থাকবে না। অব্যবস্থাপনার নানা বিষয়ে জালাল আহমেদ বলেন, ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা ও জেদ্দা বইমেলা এসির ভিতরে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরেও তারা পুরোপুরি সফল হয় না। কিছু না কিছু ব্যর্থতা তো থাকেই। তবে ২/১ দিনের মধ্যেই সব অব্যবস্থাপনার সমাধান হবে। আজ তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় ছুটির দিন মেলার প্রবেশদ্বার খোলা হবে সকাল ১১টায় এবং মেলার দ্বার বন্ধ হবে রাত ৯টায়। নতুন বই : গতকাল মেলার দ্বিতীয় দিনে ৫৫টি নতুন বই প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে গল্পের বই ৪টি, উপন্যাস ৮টি, প্রবন্ধ ৩টি, কাব্যগ্রন্থ ২০টি, গবেষণা ২টি, শিশুতোষ ৩টি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ২টি, ভ্রমণ ২টি, ধর্মীয় ১টি, অনুবাদ ১টি ও অন্যান্য ৯টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো সময় প্রকাশন প্রকাশিত ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘অ্যাভিনা’ ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ‘সংকট ও সুযোগ’, বলাকা প্রকাশন এনেছে শাহিন ভূঁঞার ‘নির্বাসিত নক্ষত্রের বুকে’, ইছামতি এনেছে মু. জসিম উদ্দিনের ‘সাধ্যের সবটুকু দেব সবারে’, পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স এনেছে পিয়াস মজিদের ‘নাচ মারবেল ও গোধূলি’, অন্যপ্রকাশ এনেছে মোস্তফা কামালের ‘চন্দ্রমুখীর সুইসাইড নোট’।

মূল মঞ্চ : গতকাল বিকালে মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘নূতন চন্দ্র সিং’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সজিব কুমার ঘোষ। অধ্যাপক আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মহীবুল আজিজ, প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ এবং রাশেদ রউফ। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন ফাহিম হোসেন চৌধুরী, মিতা হক এবং অণিমা রায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর