রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ-বিএনপিতে কোন্দল সুবিধাজনক অবস্থায় জাতীয় পার্টি

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

আওয়ামী লীগ-বিএনপিতে কোন্দল সুবিধাজনক অবস্থায় জাতীয় পার্টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোটসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেছেন। প্রার্থীদের পক্ষে তাদের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এবং ব্যানার, বিলবোর্ড ও ফেস্টুন টানিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ছয়, বিএনপির তিন, জাতীয় পার্টির এক ও ইসলামী ঐক্যজোটের একজন মাঠে রয়েছেন। তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোসহ নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের ভাইস চেয়ারম্যান বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা। তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। দুবারের সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করলেও জাতীয় পার্টির শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হননি। অবশ্য তিনি এলাকায় নিয়মিত দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকেন। সরাইল উপজেলায় আওয়ামী লীগ দলে-উপদলে বিভক্ত। কোন্দলের জেরেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ইকবাল আজাদ দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন। আর আশুগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের অবস্থান শক্তিশালী থাকলেও একাধিক গ্রুপ সক্রিয়। যাদের ইকবাল আজাদের হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয় তারা এখন এলাকায় শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। এরই মধ্যে সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি অবৈধ ঘোষণা দিয়ে এলাকায় সমাবেশ করেন ইকবাল আজাদের হত্যায় অভিযুক্তরা। এ ছাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোয় একাধিক গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা হলেন সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ)। তিনি সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় কোন্দলে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হওয়া এ কে এম ইকবাল আজাদের স্ত্রী। তিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে দলীয় নির্দেশে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। অন্যরা হলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন, অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান আনসারী, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মো. নাজমুল হোসেন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ তানবির হোসেন কাউসার। এ আসনে বিএনপির খুবই শক্তিশালী অবস্থান। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া, সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মাস্টার, সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান। উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া এখান থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে মো. আনোয়ার হোসেন ও আবদুর রহমানও নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান, খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে।

সর্বশেষ খবর