শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আশার আলো সোলারে

জিন্নাতুন নূর

আশার আলো সোলারে

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদকালে এখন পর্যন্ত দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৮৩ শতাংশ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে। এর মধ্যে এখনো যে এলাকাগুলোকে বৈদ্যুতিক সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি, এর মধ্যে আছে পটুয়াখালীর কিছু প্রত্যন্ত এলাকা। সরেজমিন জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুতের সুবিধাবঞ্চিত এই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য মানুষ বিকল্প হিসেবে অনেক দিন ধরে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। এসব গ্রামে টিনের তৈরি দ্বিতল ঘরগুলোর ছাদে ছাদে বসানো হয়েছে ছোট ছোট সোলার প্যানেল। বিদ্যুতের আলো, ফ্যান, টিভি ও মোবাইল ফোন চার্জ  করার জন্য এখানকার  বাসিন্দারা পুরোপুরি সৌরবিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে এখানে পায়রায় কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হলে এসব গ্রামবাসী বিদ্যুতের সুবিধাভোগী হবেন। কিন্তু সে পর্যন্ত পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এসব বাসিন্দাকে আশার আলো দেখাচ্ছে সৌর বিদ্যুৎই।

বিদ্যুৎ বিভাগ, ইনফাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লি. (ইডকল) এবং টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, এখন পর্যন্ত নবায়নযোগ্য উৎস থেকে মোট ৪৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের অফ-গ্রিড গ্রামীণ এলাকায় ইডকল কর্মসূচির আওতায় ১৯৫.২২ মেগাওয়াটের ৪৮ লাখ সোলার হোম সিস্টেম বসানো হয়েছে। ১০.৮৩ মেগাওয়াটের সোলার ইরিগেশন সিস্টেমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে এখন ৩৬ লাখ উন্নত চুলার ব্যবহার হচ্ছে। আর ৭২ হাজার ১০৪টি বায়োগ্যাস প্লান্ট বসানো হয়েছে। সাড়ে ৩৪ হাজার সৌরবিদ্যুৎ চালিত সড়কবাতির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘২০২০ সালে মোট চাহিদার অন্তত ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস থেকে পাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তবে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন, ব্যবহার ও প্রসারে এগিয়ে আসতে হবে।’ বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, জাতীয় গ্রিডের জন্য সোলারভিত্তিক বিদ্যুতের ৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের জন্য সরকার একটি কর্মসূচি নিয়েছে, যার আওতায় প্রতিটি গ্রামে সোলার মিনি গ্রিড পাওয়ার সিস্টেম, সৌরবিদ্যুৎ চালিত ডিজেল সেচপাম্প প্রতিস্থাপন, সোলার পার্ক স্থাপন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও রেলওয়ে স্টেশনে বিদ্যুতায়নের মতো কর্মসূচি আছে। আর সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে মোট ৩২টি সোলার পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে সরকারি উদ্যোগে স্থাপন করা হবে ১০টি এবং বেসরকারি উদ্যোগে ২২টি। আর এই সোলার পার্কগুলোর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দুই হাজার ৩১৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের শাল্লায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৬৫০ কিলোওয়াট পিক ক্ষমতার একটি সোলার মিনি গ্রিড স্থাপন করছে, যেটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর