শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রায়দানকারী বিচারকের বাড়িতে পুলিশ প্রহরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণা দেওয়ার পর বিচারক মো. আখতারুজ্জামানের গ্রামের বাড়িতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, রায় পরবর্তী সময় যাতে ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামানের গ্রামের বাড়িতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য পুলিশের একজন এসআইসহ চার সদস্য বুধবার থেকে সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছেন। এ ছাড়া একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এক প্লাটুন বিজিবি এবং বিপুলসংখ্যক পুলিশ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ওই বাড়িতে বিচারকের মা মোছা. মরিয়ম খাতুন, এক ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বসবাস করেন। বিচারকের বাবা রইচ উদ্দিন স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি করতেন। অনেক আগেই তিনি মারা গেছেন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে বিচারক মো. আখতারুজ্জামান পঞ্চম। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক সম্মান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ১৩তম বিসিএসের মাধ্যমে সহকারী জজ হিসেবে টাঙ্গাইল জেলা জজ আদালতে যোগদান করেন। বিচারকের মা মরিয়ম খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে ন্যায়বিচার করেছে। সে ছোটকাল থেকেই ন্যায়ের পক্ষে কথা বলত। কোনো অন্যায় সহ্য করত না। তাকে আমি আল্লাহর হাতে সঁপে দিয়েছি। তিনিই তাকে দেখাশোনা করবেন।’ ওই এলাকার স্কুলশিক্ষক ও সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস বসুনিয়া বলেন, ‘আখতারুজ্জামান ভাই যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন, আমি ঢাকা গেলে তার কাছে থাকতাম। তিনি সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। এখনো তাই করেন। তাকে নিয়ে আমরা গর্ব বোধ করি।’ কাউনিয়া বাজারের কলেজশিক্ষক পুস্তক ব্যবসায়ী সরোয়ার আলম মুকুল বলেন, ‘বিচারক আখতারুজ্জামান ছোটকাল থেকেই ন্যায়ের পক্ষে ছিলেন বলেই বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় দিতে পেরেছেন। তিনি আমাদের এলাকার অহংকার’।  স্থানীয় বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনছার আলী বৃহস্পতিবার বিকালে বিচারকের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, তিনি আমাদের এলাকার সন্তান। এজন্য আমরা গর্বিত। বিচারক আখতারুজ্জামান একজন সৎ বিচারক। তার জীবনযাপন খুবই সাধারণ। পিতার রেখে যাওয়া ৪২ শতক বসতভিটা ছাড়া তাদের আর কোনো জমি নেই। বিচারকের নিজস্ব কোনো গাড়ি-বাড়ি নেই। তিনি সরকারি বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন। কাউনিয়া থানার ওসি মামুন উর রশিদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনী সতর্ক রয়েছে। কেউ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসআই শাহাদৎ হোসেন জানান, বিচারকের বাড়িতে যেন কোনো ধরনের নাশকতা না ঘটে সে জন্য আমরা তৎপর রয়েছি।

সর্বশেষ খবর