বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

উন্নয়ন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মশক নিধনই চ্যালেঞ্জ

—— ওসমান গনি

জয়শ্রী ভাদুড়ী

উন্নয়ন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মশক নিধনই চ্যালেঞ্জ

‘মানুষ দেখে দৃশ্যমান উন্নয়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধন ও সর্বোচ্চ নাগরিক সুবিধা। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছি। তবে সমন্বয়ের অভাবে উন্নয়ন       বাধাগ্রস্ত হয়।’ তাই সমন্বিত উন্নয়ন বেগবান করতে একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন ডিএনসিসির প্যানেল মেয়র মো. ওসমান গনি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ডিএনসিসির চলমান উন্নয়ন ও সমস্যা বিষয়ে মতামত দেন। তিনি বলেন, রাস্তা বানিয়ে ১৫ দিন পার না হতেই অন্য কোনো সংস্থা রাস্তা কেটে কাজ শুরু করছে। এজন্য উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। সবার বার্ষিক পরিকল্পনা সমন্বয় করে এ কাজগুলো করা প্রয়োজন। এজন্য নির্দিষ্ট একটি সংস্থাকে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া উচিত। যে সংস্থাকেই দায়িত্ব দেওয়া হোক না কেন, তাদের কাজ হবে পুরো বিষয়টা সমন্বয় করা। এতে সময়, অর্থ অপচয় ও জনভোগান্তি কমে ত্বরান্বিত হবে উন্নয়ন। নতুন ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়ন বিষয়ে প্যানেল মেয়র বলেন, ‘নতুন ওয়ার্ডগুলো নিয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও আমাদের স্থপতিরা মিলে নকশা তৈরি করেছেন। প্রায় ৩২০০ কোটি টাকার এ প্রজেক্ট শুরু হলে নাগরিক সেবার শতভাগ সুযোগ-সুবিধা পাবেন নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।’

ফুটওভার ব্রিজগুলো অরক্ষিত থাকে এবং ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কথাটা সত্যি, মানুষ কিছু ফুটওভার ব্রিজকে মিনি টয়লেট বানিয়ে ফেলেছে। একটি আলাদা টিম করে বা কোনো সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়ে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার পরিকল্পনা করছি। কিছু ফুটওভার ব্রিজে গাছ লাগিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হয়েছে। বেশ কয়েকটিতে চলন্ত সিঁড়িও লাগানো হয়েছে। কিন্তু যথেচ্ছা ব্যবহারে এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জনগণ এগুলোকে নিজের সম্পদ মনে করে ব্যবহার না করলে এর রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন হয়ে পড়বে।’

ওসমান গনি আরও বলেন, ‘রাজধানী পরিচ্ছন্ন করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছি। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া একসময় এই বর্জ্য বিস্ফোরণ ঘটবে। রাস্তা পরিষ্কার করতে মেকানিক্যাল রোড সুইপার নিয়ে এসেছি। রাজধানীর পূর্বাচলে বালু নদের পাশে নতুন ল্যান্ডফিল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছি। এজন্য ১০০ একর জমি দেওয়ার জন্য রাজউককে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে আরও ৮০ একর জায়গা অতিরিক্ত কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে চলছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। নিজস্ব অর্থায়নে এবং অন্য সংস্থাগুলোর সহায়তায় ১৭টি অত্যাধুনিক টয়লেট তৈরি হয়েছে। দুটি চলমান রয়েছে। এ ছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে আরও ৭৩টি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।’ সাতরাস্তা-উত্তরা পর্যন্ত ১১টি ইউটার্ন প্রকল্পের স্থবিরতা বিষয়ে জানতে চাইলে ওসমান গনি বলেন, ‘প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক এ প্রকল্প শুরু করেছিলেন। তখন বেশকিছু সরকারি সংস্থা বিনামূল্যে তাদের জমি ব্যবহার করে এ প্রকল্প করার অনুমতি দিয়েছিল। সে অনুযায়ী টেন্ডার করে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এখন তারা ওই জমির জন্য মূল্য পরিশোধ করতে বলে। ওই পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সামর্থ্য নেই। এ বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে।’

কিছু প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি বিষয়ে জানতে চাইলে প্যানেল মেয়র ওসমান গনি বলেন, ‘এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কাজে বেশকিছু অসুবিধা হয়েছে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেই অল্প কিছু প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছি। নতুন করে কোনো প্রকল্প হাতে নিইনি। আনিসুল হকের রেখে যাওয়া প্রকল্পগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ শেষ করছি। নির্ধারিত সময়ে এবং মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার করতে তদারকি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ডিএনসিসিকে এলইডি বাতির আওতায় নিয়ে আসব।’

সর্বশেষ খবর