রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
বিসিসিতে কর্মবিরতি চলবে

মেয়রের সঙ্গে নিষ্ফল বৈঠক কর্মচারীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বকেয়া বেতন-ভাতার জন্য আন্দোলনরত বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে গতকালের মেয়রের সমঝোতা বৈঠক নিষ্ফল হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বকেয়া বেতন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অপরদিকে বর্তমান পরিস্থিতি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র।

স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন ও ২০ মাসের প্রভিডেন্ট ফান্ডের বরাদ্দ এবং দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চার মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গত রবিবার আকস্মিক কর্মবিরতি শুরু করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর ফলে নগর ভবনে সুনসান নীরবতা নেমে আসে। নাগরিকরা বিভিন্ন সেবা নিতে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরেন। এক কথায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন। এ অবস্থায় মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান, প্যানেল মেয়র হাজী কে এম শহীদুল্লাহ, মোশারেফ আলী খান বাদশা এবং তাছলিমা কালাম পলিসহ সব কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষ হয় বিকাল পৌনে ৩টায়। দীর্ঘ বৈঠকে সিটি মেয়র মার্চ মাসের ১০ তারিখের মধ্যে এক মাসের, এপ্রিলে দুই মাসের এবং মে মাসের শুরুতে আরও দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেন। কিন্তু  আন্দোলনকারীরা একসঙ্গে চার মাসের বকেয়া বেতন এবং ১০ মাসের প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ বরাদ্দের দাবি জানান। এ নিয়ে দীর্ঘ দর-কষাকষির পর মেয়রের প্রস্তাবে সম্মত হতে না পেরে বিকাল পৌনে ৩টার দিকে আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে সভাস্থল ছাড়েন। এ সময় মেয়রের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে করতে সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যান অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দীপক বলেন, ‘উনি (মেয়র) একা অফিস করুক। বকেয়া না পাওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।’ আরেক নেতা বিসিসির কর নির্ধারক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সিটি মেয়র গত বছরও বকেয়া বেতন পরিশোধের ওয়াদা করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি ওয়াদা রক্ষা করেননি। এ কারণে আরও বেতন বকেয়া হয়েছে। এর সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। এদিকে সমঝোতা বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ার জন্য আন্দোলনকারী নেতাদের দুষেছেন সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল। তিনি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে বলে জানান। একই সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ না দিলে তাদের বাদ দিয়ে নতুন করে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেন মেয়র কামাল। বরিশাল সিটি করপোরেশনে স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলিয়ে মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। তাদের প্রতি মাসে বেতনের জন্য প্রয়োজন হয় প্রায় ৩ কোটি টাকা।

সর্বশেষ খবর