সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোটা পদ্ধতি নিয়ে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ দুই পক্ষের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে গতকাল রাজধানীতে পাল্টাপাল্টি মিছিল ও সমাবেশ করেছে দুই পক্ষ। শাহবাগে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীরা। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রঅধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে এক ঘণ্টার ওই কর্মসূচিতে শত শত শিক্ষার্থী অংশ নেন। ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটা বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘নিয়োগে অভিন্ন কার্ড মার্ক নিশ্চিত কর’, ‘নাতি পুতি কোটা বাতিল কর’, ‘১০%-এর বেশি কোটা নয়’- ইত্যাদি দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন তারা। কর্মসূচিতে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিনামায় ছিল সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা। কর্মসূচির শুরু থেকেই ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। প্রায় ৪০ মিনিট বিক্ষোভ চলার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। সমাবেশ থেকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর আন্দোলনকারীদের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। এ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান বলেন, আমাদের এই আন্দোলন কোটার বিরুদ্ধে নয়, এটা কোটা সংস্কারের আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা এর অন্তরায়। আমরা চাই কোটা সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া হোক। দাবি আদায় না হলে আগামী ৪ মার্চ মুখে কালো কাপড় বেঁধে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ : সাধারণ ছাত্রঅধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশের পরপরই একই স্থানে সমাবেশ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি। সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য সংরক্ষিত ৩০ শতাংশ কোটার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সংগঠনটির সভাপতি মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, কোটার বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্রছাত্রীর ব্যানারে একটি অসাধু চক্র অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার নিয়ে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হচ্ছে। কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা ‘কোটা বাতিল না করলে নৌকায় ভোট দেব না, ‘যার যা আছে তা নিয়ে কোটার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ুন’ সব উসকানিমূলক মন্তব্য ও কোটার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহার করছে।’ সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজাসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগে অবস্থান নেয়।

সর্বশেষ খবর