সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

মদনটাকের দেখা পঞ্চগড়ে

সরকার হায়দার

মদনটাকের দেখা পঞ্চগড়ে

পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার একটি গ্রামের নাম হারাগঞ্জ । বাংলাদেশের আর দশ গ্রামের মতোই ছবির মতো একটি গ্রাম। কিন্তু একটি পাখি এই গ্রামকে করে তুলেছে বাংলাদেশের আর সব গ্রাম থেকে আলাদা। সুন্দরবনের পরে একমাত্র হারাগঞ্জেই বিচরন করছে মহাবিপন্ন পাখি মদনটাক বা হারগিলা। বাংলাদেশে এক সময় অনেক জায়গায় এ পাখির দেখা মিললেও এখন আর তা হয় না। বন্য প্রাণী অধিদপ্তরের তথ্য মতে সর্বশেষ ২০১২ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে এক জোড়া মদনটাকের দেখা মিলেছিল। এরপর সেখান থেকেও তারা হারিয়ে যায়। তবে এখন পঞ্চগড়ের হারাগঞ্জে গোটা বিশেক মদনটাক আবাস গড়েছে। এই পাখিগুলোকে নিয়ে কাজ করছেন এলাকার আলোকচিত্রি ফিরোজ আল সাবা। তার প্রধান পরিচয় তিনি বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী। তিনি জানান, ২০১৫ সালে তিনি প্রথস হারাগঞ্জে একঝাক মদনটাকের সন্ধান পান। দুই মাস পর্যবেক্ষন করে তিনি নিশ্চিত হন, ঝাকটিতে আট থেকে দশটি মদনটাক আছে। এর পরে এলাকায় তিনি ব্যাক্তিগত উদ্যোগে মদনটাক রক্ষার জন্য গ্রামবাসীদের মধ্যে সচেতনতামুলক কর্মকান্ড চালান। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সেমিনার আয়োজন করেন। তিনি জানান, মদনটাক শিমুল গাছে থাকতে পছন্দ করে। তাই এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে বেশ কিছু শিমূল গাছের চারা রোপন করেন। তার দাবি এসব কর্মকাণ্ডের জন্য এলাকাবাসী সচেতন হন। ফলে তারা আর কাউকে পাখিগুলো বিরক্ত হয় এমন কাজ করতে দেন না। ফলে আড়াই থেকে তিন বছরেই মাত্র ১০ টি পাখি থেকে ২০টি হয়েছে।  বর্তমানে দুটি ছোট  শিমূল গাছে পাখিগুলো থাকছে। এ বিষয়ে হারাগাঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মদনটাককে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় হাটগোলা। এই পাখিটির গুরুত্ব আমরা বুঝতাম না। ফিরোজ আল সাবা এসে সেমিনার করার পর স্থানীয়দের মধ্যে গনসচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন আর কেউ পাখিটিকে মারেনা। তবে পাখিটিকে সংরড়্গনের জন্য সরকারের এগিয়ে আসা দরকার। চাষি বান্ধব পাখি মদনটাক। ক্ষেত খামারের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে চাষিদের ব্যাপক উপকার করে এই পাখি।  স্থানীয়দের আশা এই এলাকায় মদনটাক সংরক্ষনে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর