বৃহস্পতিবার, ১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
গাইবান্ধায় ৪ পুলিশ হত্যা

৫ বছরেও শুরু হয়নি বিচার কর্যক্রম

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর সুন্দরগঞ্জে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের চার সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পূর্তিতে গতকাল বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আয়োজনে নিহত চার পুলিশ স্মরণে সভা অনুুষ্ঠিত হয়। এদিকে, চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পরও পাঁচ বছরে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে মামলার দীর্ঘসূত্রতায় হতাশ ও ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে আগামী ৪ মার্চ বিচারকাজ শুরুর কথা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

গতকাল বিকালে বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আয়োজনে কেন্দ্রের ইনচার্জ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন অপরাধ) আবদুল্লাহ আল-ফারুক, বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মঈনুল হক, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম গোলাম কিবরিয়া, সহকারী পুলিশ সুপার কে এন রায়, সুন্দরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান, বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নজমুল হুদা প্রমুখ। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ দেওয়ার পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় শুরু হয় জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মী ও ক্যাডারদের তাণ্ডব। বামনডাঙ্গা বাজার, বামনডাঙ্গা রেলস্টেশন, শোভাগঞ্জ বাজার, বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, ছাইতানতলা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে দোকানপাট ও বাড়িঘর ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। তারা বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্য তোজাম্মেল হক, নজিম উদ্দিন, বাবলু মিয়া ও হযরত আলীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে তারা। এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ অধিকতর তদন্ত শেষে এক বছর ছয় মাস ২৩ দিন পর তৎকালীন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মোজাম্মেল হক ২৩৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান বলেন, চার পুলিশ হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২৩৪ আসামির মধ্যে ২২৯ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে সবাই জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। এ ছাড়া প্রধান আসামি সাবেক এমপি আবদুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ পাঁচজন দেশের বাইরে অবস্থান করায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। গাইবান্ধা জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে মামলাটি দায়রা জজ আদালতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বিচারকাজ শুরুর লক্ষ্যে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গেজেট জারি করা হয়েছে। ৪ মার্চ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সর্বশেষ খবর