বৃহস্পতিবার, ১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
বুথ ফেরত জরিপ

ত্রিপুরাও যাচ্ছে বিজেপির দখলে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

আসাম, মণিপুর ও অরুণাচল প্রদেশের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বিজেপি। ভোট-পরবর্তী জরিপেই উঠে এসেছে এই তথ্য। আরেকটি রাজ্য মেঘালয়ে এবার কোনো দলই সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরায় ৬০ আসনে ভোট হয়। অন্যদিকে গত পরশু ভোট হয় নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে। আগামী পরশু শনিবার ভোট গণনা। নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পরই জরিপে যে পূর্বাভাস উঠে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ ২৫ ধরে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্ট সরকারকে পরাজিত করে ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি। বুথ ফেরত জরিপ অনুযায়ী ৬০ আসনবিশিষ্ট ত্রিপুরাতে বিজেপি ও তাদের জোট সঙ্গী ইন্ডিজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরাকে (আইপিএফটি) ৪৫ থেকে ৫০টি আসনে জয় পেতে পারে। যেখানে মানিক সরকারের নেতৃত্বাধীন সিপিআইএম পেতে পারে মাত্র ৯-১০টি আসন।

নিউজ এক্সের জরিপে দেখা গেছে, ত্রিপুরায় বিজেপি ও আইপিএফটি জোট ৩৫-৪৫ আসন পেতে পারে। বামেরা পেতে পারে ১৪-২৩টি আসন। তবে কংগ্রেস এবার কোনো আসনেই জেতার মতো অবস্থায় নেই।

এক্সিক মাই ইন্ডিয়ার জরিপে দেখা গেছে, বিজেপি জোট ৪৪-৫০টি আসন পেতে পারে, বামেরা পেতে পারে ৯-১৫টি আসন এবং অন্যরা ৩টি আসনে জয় পেতে পারে।

উত্তর-পূর্ব ভারতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিজেপি নেতা শাহনাওয়াজ হোসেন, আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, অভিনেত্রী-মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বলিউড অভিনেত্রী ও বিজেপি সংসদ সদস্য হেমা মালিনী— সবাই ত্রিপুরায় জোরদার প্রচারণা সেরেছিলেন। অন্যদিকে বামেরা মূলত নির্ভরশীল ছিল রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এবং সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাত ও বৃন্দা কারাতের মতো কয়েকজন সিনিয়র নেতার ওপর। আসলে নির্বাচনের আগেই বামেরা যেন ধরেই নিয়েছিল যে, এবার আর ফিরে আসা সম্ভব নয়। আর কংগ্রেসের একমাত্র ভরসা ছিল রাহুল গান্ধী।

নাগাল্যান্ডে দেড় দশকের পুরনো জোট সঙ্গী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী টিআর জেলিয়াংয়ের নেতৃত্বাধীন নাগাল্যান্ড পিপলস ফ্রন্টকে (এনপিএফ) ছেড়ে রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিওর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক প্রোগেসিভ পার্টির (এনডিপিপি) সঙ্গে জোট করে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি।

৬০ আসনের মধ্যে বিজেপি-এনডিপিপি জোট পেতে পারে ২৭-৩২টি আসন। এনপিএফ পেতে পারে ২০-২৫ আসন এবং কংগ্রেস মাত্র ২টি আসন পেতে পারে বলে জরিপে দেখানো হয়েছে।

সি-ভোটার জরিপে দেখা গেছে, বিজেপি-এনডিপিপি জোটের দখলে যেতে পারে ২৫-৩১টি আসন, এনপিএফ পেতে পারে ১৯-২৫টি আসন, কংগ্রেস ০-৪টি আসন এবং অন্যরা ৬-১০টি আসনে জয় পেতে পারে।

কংগ্রেস শাসিত মেঘালয় রাজ্যে এবার কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বলেই খবর পাওয়া গেছে। ৬০ আসনের মেঘালয়ে ভারতের লোকসভার সাবেক স্পিকার পিএ সাংমার দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ২৩-২৭ আসন পেতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে নিউজ এক্স। বিজেপি ৮-১২ আসন পেতে পারে এবং শাসক দল কংগ্রেস ১৩-১৭ আসন পেতে পারে বলে জরিপে দেখানো হয়েছে।

আবার এক্সিস ইন্ডিয়ার জরিপে দেখা যাচ্ছে, মেঘালয়ে কংগ্রেস ২০টি, এনপিপি ১৪টি এবং বিজেপি ৫টি আসনে জয় পেতে পারে। অন্যরা পেতে পারে ২০টি আসন।

সর্বশেষ খবর