শনিবার, ৩ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

খুলনায় ৯৯ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন, জনসভায় ভাষণ

প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

তিন বছর পর আজ শনিবার খুলনায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে তিনি প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ৯৯টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। ভাষণ দেবেন জনসভায়। ২০০৮ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর খুলনায় এটি প্রধানমন্ত্রীর চতুর্থ সফর।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য খুলনার ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ জনসভায় বিকাল তিনটায় তিনি প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। জনসভাস্থলে প্রধানমন্ত্রী কাজ শেষ হওয়া ৪৭টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও চলমান ৫২টি কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সভামঞ্চের পাশে এ জন্য ফলক স্থাপন করা হয়েছে। এর আগে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী খুলনার খালিশপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) এর ৫৮তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।

যেসব প্রকল্পের উদ্বোধন : ৬৬৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত উন্নয়ন প্র্রকল্পের মধ্যে রয়েছে— খুলনা রেলওয়ে স্টেশন এবং ইয়ার্ড রি-মডেলিং

প্রকল্প, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস ভবন, ওয়াসা ভবন, শহীদ মিনার, ৫ তলা বিশিষ্ট কয়রা ডাকবাংলো ভবন, রূপসা-শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক, জলমা-কপিলমুনি-শোভনা ইউনিয়ন ভূমি অফিস, রূপসা ফায়ার স্টেশন ভবন, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক ভবন ও গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে নির্মিত হওয়া এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

এ ছাড়া তিনি ১২৮৬ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫২টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মধ্যে রয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০তলা বিশিষ্ট শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. মোফাজ্জেল হায়দার চৌধুরী আবাসিক ভবন, আলিয়া মাদ্রাসা মডেল মসজিদ, ওয়াসা প্রকল্পের রূপসা নদীর তলদেশ দিয়ে পাইপ লাইন স্থাপন, শেখ রাসেল ইকোপার্ক, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, সিভিল সার্জনের অফিস ভবন, খুলনা সদর হাসপাতালকে ১৫০ বেড থেকে ২৫০ বেডে উন্নীতকরণ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সুলতানা কামাল জিমনেসিয়াম, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ ডরমেটরি, জলাবদ্ধতা নিরসনে ভদ্রা ও সালতা নদী পুনঃখনন।

আইইবির কনভেনশন উদ্বোধন : প্রধানমন্ত্রী আজ বেলা ১১টায় খুলনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) এর ৫৮তম কনভেনশনের উদ্বোধন করবেন। গতকাল দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর এ কথা বলেন। দেশের প্রাচীনতম ও একমাত্র এই জাতীয় ইনস্টিটিউশনের চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ হাজার প্রকৌশলী অংশ নেবেন।

নৌকামঞ্চে ভাষণ : নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে বর্ণিল রূপে সেজেছে বন্দর নগরী খুলনা। শুভেচ্ছা তোরণে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। তিনি বলেন, এই জনসভার বড় চমক থাকবে নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চ ও খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাটের কয়েক লাখ নারী কর্মীর উপস্থিতি। ১১০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকা আকৃতির সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। খুলনার জনসভায় অন্তত ১০ লাখ মানুষের জমায়েতের কথা ভাবছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। যার অর্ধেকই থাকবে নারী। নারী কর্মীরা সবাই সার্কিট হাউস মাঠে অবস্থান করবেন।

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা : খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর পিপিএম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে খুলনা মহানগরীকে। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন রয়েছে সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য। থাকছে ডগ স্কোয়াট, র‌্যাবের বিশেষ টহল ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা। জেলা-উপজেলায় চলছে উৎসবের আমেজ। শহরে আলোকসজ্জা, বিলবোর্ড আর ব্যানার- ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। তিনি বলেন, স্মরণকালের সর্ববৃহৎ লোকসমাগম হবে এই জনসভায়।

সর্বশেষ ২০১৫ সালে খুলনায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে সময় তিনি খুলনা শিপইয়ার্ডে নৌবাহিনীর জন্য যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

সর্বশেষ খবর