শনিবার, ৩ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

মুক্তাদিরে একাট্টা বিএনপি আওয়ামী লীগে ধোঁয়াশা!

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

মুক্তাদিরে একাট্টা বিএনপি আওয়ামী লীগে ধোঁয়াশা!

সিলেট-১ (সিটি করপোরেশন-সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে প্রার্থিতা সম্পর্কে কোনো ইঙ্গিত না থাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরা অনেকটা দোটানায়। আওয়ামী লীগের অন্তত তিন নেতার নাম এ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচিত হচ্ছে।

অন্যদিকে এ আসনে বিএনপির কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী ঘিরে নানা গুঞ্জন থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে সেই গুঞ্জন হয়ে গেছে একমুখী। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরই আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন, এমন গুঞ্জন ডালপালা মেলে ক্রমেই দলটির নেতা-কর্মীদের বিশ্বাসে রূপ নিচ্ছে। দলীয় নেতা-কর্মীরাও খন্দকার মুক্তাদিরের জন্য ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতিতে সিলেট-১ মর্যাদাপূর্ণ আসন হিসেবে পরিচিত। বলা হয়ে থাকে, এ আসনে যে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী বিজয়ী হন, সে দলই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং সরকার গঠন করে। অতীতেও এমনটা দেখা গেছে। এজন্য এ আসনটিতে সবসময়ই শক্তিশালী, গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা থাকে রাজনৈতিক দলগুলোর। সিলেট-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে অর্থমন্ত্রীর ভাই ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. এ কে মোমেন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের নাম দলীয় প্রার্থী হিসেবে আলোচনা আছে। বয়সের কারণে অর্থমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না-ও করতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। অবশ্য এমন গুঞ্জনও আছে, নির্বাচনে বিএনপি যদি অংশ নেয়, তবে জয়ের পাল্লা ভারী করতে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মুহিতকেই মনোনয়ন দিতে পারে। তবে মুহিত নির্বাচন না করলে অপর দুই সম্ভাব্য প্রার্থীর যে কেউ মনোনয়ন পেতে পারেন বলে দলীয় নেতা-কর্মীদের ধারণা। সে লক্ষ্যে ড. মোমেন ও মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জোর তৎপরতায় রয়েছেন। এ তিনজন ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর হবিগঞ্জের ড. ফরাসউদ্দিন ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার সিলেটের কাজীটুলার বাসিন্দা ছহুল হোসাইনও সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। এ বিষয়ে ড. এ কে মোমেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কাজে লাগানোর জন্য আমার নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দেশে এনেছেন। তিনি যে প্রতিশ্রুতি দেন, তা রক্ষা করেন। আমি সিলেটের মানুষের জন্য, দলের জন্য কাজ করছি। নেত্রী প্রয়োজন মনে করলে আমাকে মনোনয়ন দেবেন।’ এ ব্যাপারে কথা বলতে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিতভাবেই সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বক্তব্য রাখছেন তিনি। সিলেট-১ আসন ঘিরে বিএনপিতে কিছুদিন আগেও গুঞ্জন ছিল খালেদা জিয়া, তারেকপত্নী জোবায়দা রহমান, শমসের মবিন চৌধুরী, খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরকে নিয়ে। এ চারজনের কেউ প্রার্থী হতে পারেন। তবে সে আলোচনা সাম্প্রতিক সময়ে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য খন্দকার আবদুল মালিকের ছেলে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। নির্বাচনী রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না খন্দকার মুক্তাদির। তবে গত প্রায় বছর দুয়েক ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। বিশেষ করে গত বছরখানেক ধরে আটঘাট বেঁধেই মাঠে আছেন তিনি। সিলেট-১ আসনকে টার্গেট করে খন্দকার মুক্তাদির যখন সক্রিয় হয়ে ওঠেন, তখন বিএনপি নেতা-কর্মীদের কাছে তাঁর খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। কিন্তু দলের জন্য নিজেকে নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে প্রমাণ করে, সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের একসুতোয় গেঁথে নিজের গ্রহণযোগ্যতাকে পোক্ত করে নিয়েছেন মুক্তাদির। সামগ্রিক বিষয়ে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সিলেট জেলা ও মহানগরের পদধারী নেতারা ছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে আমি সহযোগিতা ও সমর্থন পাচ্ছি। ফলে কম সময়ের মধ্যে নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করে নির্বাচনী কাজের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছি। তাদের সহযোগিতা না পেলে এতদূর এগোনো আমার পক্ষে সম্ভব হতো না।’

সর্বশেষ খবর