শিরোনাম
রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

সংসদের আগে স্থানীয় ভোটে দুই দল

২৯ মার্চ শতাধিক ইউপি পৌরসভায় ভোট

গোলাম রাব্বানী

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের ভোটের লড়াইয়ে থাকছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্য দলের প্রার্থীরা। দীর্ঘদিন আটকে থাকা শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় ভোট হচ্ছে আগামী ২৯ মার্চ। বৃহস্পতিবার এ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিল শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তরা বলেছেন, ভোট আওয়ামী লীগ-বিএনপিরসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা রয়েছেন। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে তাদের দলের প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। তারা বলেন, একাদশ সংসদের ভোটের আগে স্থানীয় সরকারের ভোটের মাঠে নৌকা-ধানের শীষের লড়াই হবে। নির্বাচন কমিশনও সংসদের আগে এসব নির্বাচনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ইসির কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। যাতে এই নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটারদের মাঝে সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো নেতিবাচক ধারণা না জন্মায় এবং যেন আস্থার সংকট তৈরি না হয়, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশের শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার সাধারণ এবং উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ মার্চ। তফসিল অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১ মার্চ, মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ও ৫ মার্চ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মার্চ, প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মার্চ এবং ভোটগ্রহণ করা হবে ২৯ মার্চ।

নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, আগামী ২৯ মার্চ ৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) সাধারণ, ৫৩টি ইউপিতে উপনির্বাচন, চারটি পৌরসভায় সাধারণ, একটি পৌরসভায় মেয়র পদে ও চারটিতে সাধারণ কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচন, চট্টগ্রাম ও খুলনা সিটি করপোরেশনের দুটি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন, দুটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে সব দলকে চায় ইসি : চলতি মার্চের শেষ দিকে ও এপ্রিল থেকে পাঁচ সিটি নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হচ্ছে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন আটকে যাওয়ার পরে সময়মতো পাঁচ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে পূর্ণপ্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংসদের আগে সিটি নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দলকে রাখতে চায় সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পরে সংসদ নির্বাচনে তার অংশগ্রহণের যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা আসন্ন পাঁচ সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না তা পর্যবেক্ষণ করছে কমিশন। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন— বিএনপি ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। অবশ্যই রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপির একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান আছে। তিনি বলেছেন, আমরা সব সময় বলছি নিরপেক্ষ থাকব। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল একই সুযোগ-সুবিধা পাবে। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করব সব দল নির্বাচনে আসুক। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু মুখেই সব দলকে ভোটে চাইলে হবে না; কার্যকর উদ্যোগও নিতে হবে। নির্বাচনে সবার জন্য কীভাবে সমান সুযোগ থাকবে তা পরিষ্কার করতে হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন—নির্বাচন কমিশন সংসদের আগে পাঁচ সিটি নির্বাচন করে রাজনৈতিক দল ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে চায়। তারাও সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে এপ্রিলে গাজীপুর সিটিতে এবং মে-জুনের মধ্যে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট সিটিতে ভোটের প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। তবে গাজীপুরসহ পাঁচ সিটিতেও একসঙ্গে ভোট করার কথা ভাবছে কমিশন। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ এবং গাইবান্ধা-১ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ১৩ মার্চ। আটকে থাকা ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ভোটও হবে ২৯ মার্চ।

জানা গেছে, নভেম্বরের মাঝামাঝি একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে তারা। তবে তার আগে পাঁচ সিটি শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। এক্ষেত্রে চলতি বছরের জুনের মধ্যে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে পূর্ণপ্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর