মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

আসন ও ক্ষমতার ভাগে সমঝোতা চায় ১৪ দলের শরিকরা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বাদল নূর

আসন ও ক্ষমতার ভাগে সমঝোতা চায় ১৪ দলের শরিকরা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা চায় ১৪ দলীয় জোটের অন্য শরিক দলগুলো। নির্বাচনে আসন বণ্টন, জোট বিজয়ী হলে সরকারের অংশীদারিত্ব এবং নির্বাচনী    কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে   চান নেতারা।

শরিক দলের একাধিক নেতা জানান, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদমুক্ত এবং অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তারা জোটবদ্ধ হয়েছেন। একই সঙ্গে ক্ষমতার স্বাদও তারা পেতে চান। শরিক দলের কোনো কোনো নেতা জানান, জোটের প্রতিটি দলকে মূল্যায়ন করতে হবে। ছোট-বড় পার্থক্য করে কয়েকটি দলকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার করে অন্যদের বঞ্চিত করা হলে জোট ভেঙে যেতে পারে। তবে সরকারবিরোধী যে কোনো আন্দোলন প্রতিহত করতে জোটবদ্ধ হয়ে রাজপথে শামিল হবেন তারা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অসাম্প্রদায়িক এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়তে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে জোটভুক্ত হয়েছি। তবে শুধু আন্দোলন-সংগ্রাম নয়, দলীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়েও জোট প্রধানের সঙ্গে শরিক দলের নেতাদের আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। শরিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিজ নিজ দলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন শরিক দলের অধিকাংশ নেতা। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান তারা। এ ছাড়া নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য ১৪ দলীয় জোটের প্রতিটি শরিক দলকে আলোচনা সাপেক্ষে আসন ছেড়ে দেওয়ার দাবি তুলছেন তারা। তাছাড়া নির্বাচনী কৌশল কী হবে সে বিষয়েও খোলামেলা আলোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন নেতারা। বাসদ আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান বলেন, ১৪ দলীয় জোটের  শরিক দলের দু-চারজনকে নয়, সব দলকে ক্ষমতার অংশীদারিত্ব দেওয়া প্রয়োজন। নির্বাচনী আসন বণ্টনের ক্ষেত্রেও সব দলকে মূল্যায়ন করতে হবে। শুধু জোটবদ্ধ হয়ে সভা-সমাবেশ করলেই হবে না। এ বিষয়গুলো নিয়ে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।  ২০০৫ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃতে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়। জোটভুক্তদ্ধ হয়েই ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় এই জোট। এ দুটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে দু-চারটি দল ছাড়া জোটের অন্যান্য দলকে আওয়ামী লীগ মূল্যায়ন করেনি বলে তাদের অভিযোগ। ফলে ক্ষমতার অংশীদারিত্ব থেকে বাদ পড়া নেতারা জোটে থাকলেও তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ আছে। জোটের একাধিক নেতা জানান, ১৪ দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলেও তারা কেবল সভা-সমাবেশে ডাক পান। কোনো কোনো নেতা নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ১৪ দলের বৈঠকে দাবি তুললে দাবি বিবেচনা করা হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করা হয়। পরবর্তীতে তা আর বাস্তবায়ন হয় না। জোট অটুট রাখতে হলে বিষয়গুলো আওয়ামী লীগের বিবেচনায় আনতে হবে বলে মনে করেন কয়েকজন শরিক নেতা। শরিক দলের আরেক নেতা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন জানান, ১৪ দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েই আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেব। তবে নির্বাচনী প্রচারণা, আসন বণ্টনসহ দলীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর