শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

তিন দলের ত্রিমুখী লড়াই বগুড়ার শিবগঞ্জে

বগুড়া-২

আব্দুর রহমান টুলু, বগুড়া

তিন দলের ত্রিমুখী লড়াই বগুড়ার শিবগঞ্জে

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। তারা দোয়া চাইছেন আর নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

১৯৯৬ সালে এ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির এ কে এম হাফিজুর রহমান। ২০০১ সালে একই দলের মরহুম রেজাউল বারি ডিনা এবং ২০০৮ সালে আবার এ কে এম হাফিজুর রহমান বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ্। শিবগঞ্জে আওয়ামী লীগের চেয়ে জাতীয় পার্টি বেশ শক্তিশালী। আর গত নির্বাচনগুলোর সূত্র ধরে বললে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির চেয়ে বিএনপি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। তবে এবার এই নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষণীয়। আওয়ামী লীগ চাইছে এবার নৌকা প্রতীক নিয়ে এই আসনে কেউ নির্বাচন করুক। আর বিএনপি হারানো আসন উদ্ধারে  বেশ শক্তভাবেই মাঠে নেমেছে। জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণা ঘিরে এ আসনে         প্রচারণা জমে উঠেছে। উঠান বৈঠক, পথসভা ও গণসংযোগে তৎপর সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ আগামী নির্বাচনেও প্রার্থী হবেন। তার অনুসারীরা বলছেন, মহাজোট হলে তিনি এই আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন। দলের পক্ষ থেকে প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ফকির, জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. রেজাউল আলম জুয়েল, ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন, শিবগঞ্জ পৌর মেয়র তৌহিদুর মানিক ও মোস্তাফিজার রহমান। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর শাহে আলম, সাবেক এমপি এ কে এম হাফিজুর রহমান, সাবেক এমপি নুর আফরোজ বেগম জ্যোতি, জেলা যুগ্ম সম্পাদক এম আর ইসলাম স্বাধীন। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক সাবেক ডাকসু ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজার রহমান জানান, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত পেলে তিনি নির্বাচন করবেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ফকির বিশ্বাস করেন, মনোনয়ন পেলে ভোটাররা তাকে নির্বাচিত করবেন। আবার তিনি এলাকার উন্নয়ন করবেন। পৌর মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিকও ভোটের মাঠে রয়েছেন। শিবগঞ্জে তিনিই প্রথম নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। মেয়র মানিক বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য তিনি মাঠে অনেক আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন। রাতদিন বিবেচনা না করে যে কোনো মানুষের সমস্যায় তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সাধারণ মানুষ তাকে সংসদ নির্বাচনেও জয়ী করবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। বিএমএ বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল বিশিষ্ট অর্থোপেডিক সার্জন। তিনি বগুড়া বিএমএর পর পর তিনবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি বগুড়া জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক। গত ২০ বছর ধরে ডা. জুয়েল তার নিজ এলাকায় প্রতি শুক্রবার বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে তৃণমূল ভোটারদের সঙ্গে তিনি গণসংযোগ করছেন। শিবগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপজেলায় মীর শাহে আলমের নেতৃত্বে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে উপজেলা বিএনপির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়। তিনি জানান, এলাকায় গত চার বছরে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি, যা উন্নয়ন হয়েছে তা সরকারের চলমান কার্যক্রমের অংশ। এলাকার মানুষ এবার উন্নয়নের জন্য ধানের শীষে ভোট দেবে। তিনি মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন বলে জানান। সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম হাফিজুর রহমান বলেন, এমপি থাকাকালীন এলাকার উন্নয়নের কাজ করেছেন। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনের টিকিট তিনিই পাবেন। সে অনুযায়ী মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তবে নির্বাচনে জামায়াতের ভোট জয়-পরাজয়ে নিয়ামক হয়ে দাঁড়াবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।

সর্বশেষ খবর