শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

পদ্মা সেতুর তৃতীয় স্প্যান জাজিরায় নেওয়া হচ্ছে

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

পদ্মা সেতুর তৃতীয় স্প্যান জাজিরায় নেওয়া হচ্ছে

দ্রুত এগিয়ে চলেছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ। সেতুর ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) বসানোর জন্য জাজিরা প্রান্তে নেওয়া হচ্ছে তৃতীয় স্প্যান ৭-সি। এদিকে ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে দুটি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে ৩০০ মিটার কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। তৃতীয় স্প্যানটি পিলারের ওপর বসলে দৃশ্যমান হবে ৪৫০ মিটার।  

গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন  ইয়ার্ড থেকে ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের এই স্প্যানটি নিয়ে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এর আগে সকাল থেকেই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মাওয়া প্রান্ত থেকে ক্রেনটি চালিয়ে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছাতে সময় লাগবে দুই দিন। পরে স্প্যানটি খুঁটিতে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে। পুরো কাজটি হবে ক্রেন আর প্রযুক্তির সাহায্যে। জাজিরা প্রান্তে স্প্যান তোলার কাজ হলেও নাব্য সংকট, তীব্র স্রোত এবং নকশা জটিলতায় পিছিয়ে পড়ছে মাওয়া প্রান্তের কাজ। পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী আহাদ উর রহমান জানান, মাওয়া প্রান্তের তিন নম্বর পিলারের কাজ শেষ। বর্তমানে কাজ চলছে দুই, চার ও পাঁচ নম্বর পিলারের। এর মধ্যে দুই নম্বর পিলারের বেস গ্রাউটিং এবং চার ও পাঁচ নম্বর পিলারের রেবার বাউন্ডিংয়ের কাজ চলছে। সম্প্রতি ৪১ নম্বর পিলারের পিয়ার ক্যাপ কংক্রিটিং কাস্টিং শেষ হয়েছে। তিনি জানান, এখন ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলার ৭-সি স্প্যান বসানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রথম স্প্যান বসাতে প্রকৌশলীদের বেশি সময় লাগলেও আস্তে আস্তে বাকি স্প্যান বসাতে কম সময় লাগবে। শুকনো মৌসুমের সুবিধা কাজে লাগাতে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে মাওয়া প্রান্তের পাইলিংয়ের কাজ এগিয়ে রাখতে চান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তিনটি হ্যামার সক্রিয় থাকায় পিলার বসানোর কাজে সময় কম ব্যয় হচ্ছে। পানি থেকে ১২০ ফুটের বেশি উচ্চতায় স্প্যানগুলো বসানো হচ্ছে। একেকটি স্প্যানের ওপর ৩০৭৫টি স্ল্যাপ বসিয়ে তৈরি করা হবে ২২ মিটার প্রস্থের চার লেনের সড়ক। পদ্মা সেতু প্রকল্পে এখন প্রায় চার হাজার লোক কাজ করছেন। তবে কর্মীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে-কমছে। শুকনো মৌসুমে বেশি লোক কাজ করেন। আবার বর্ষায় কিছুটা কমে যায়। কর্মরত মানুষের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি বিদেশি, যাদের বেশির ভাগই চীনের। প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, সব কিছু অনুকূলে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই বসবে তৃতীয় স্প্যান। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের খুঁটিনাটি নানা বিষয় আছে, যা নির্ধারিত সময় দিয়েও হয় না। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২ পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো এবং সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি।

সর্বশেষ খবর