বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

সীমানায় বড় পরিবর্তন আসছে না

সংসদীয় আসন

গোলাম রাব্বানী

সীমানায় বড় পরিবর্তন আসছে না

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানায় বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না। তবে জনসংখ্যার ভারসাম্য, প্রশাসনিক সুবিধা, ছিটমহল ও নতুন প্রশাসনিক এলাকার কারণে ৩৬ আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আসতে পারে। নির্বাচন কমিশন সীমানার বিষয়ে একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করেছে। খসড়ায় নতুন উপজেলা ও ছিটমহল বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। তবে ঢাকার আসনগুলোয় তেমন কোনো পরিবর্তন না এলেও জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা করতে সাভারের আসনে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সীমানাসংক্রান্ত আইনি জটিলতার সমাধান করতে চলতি মাসের মধ্যে সীমানা পরিবর্তনের খসড়া প্রকাশ করতে যাচ্ছে কমিশন।

আজ সীমানাসংক্রান্ত প্রাথমিক খসড়া নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। সকাল ১০টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সীমানাসংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদীয় সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম সোমবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বৈঠকে আলাপ-আলোচনা করেই সীমানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। বৈঠকে সংসদীয় সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। আর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সদস্য অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার প্রমুখ। বৈঠকের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, ‘আমরা চা খেতে গিয়েছিলাম।’ এদিকে বৈঠকে সীমানা নিয়ে আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, সম্প্রতি জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা ইসিতে এসেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল এসেছিল। ইসি সচিবালয় কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অন্তত ছয় মাস আগেই সীমানা নির্ধারণের গেজেট প্রকাশ করতে হয়। আর চলতি মাসে খসড়া প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। এজন্য একটি প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এতে ৩৬টি আসনে পরিবর্তন আনার চিন্তা করা হচ্ছে। ঢাকার আসনগুলোর মধ্যে শুধু সাভারে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। এ ছাড়া লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারীর কয়েকটি আসনসহ ৩৬ সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আসতে পারে।

৩৬ আসনে পরিবর্তনের সম্ভাবনা : ইসির কর্মকর্তারা জানান, পাঁচ বছরে নতুন উপজেলা, পৌরসভাসহ সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদে কিছু প্রশাসনিক এলাকা যুক্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও ভাঙনও হয়েছে। আবার ছিটমহল বিলুপ্ত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সংসদীয় আসনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ইসির সীমানা পুনর্নির্ধারণসংক্রান্ত কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বড় পরিসরে সংসদীয় আসনের ব্যাপক পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছি না। কিছু এলাকায় ছোটখাটো পরিবর্তন আসবে। নতুন আদমশুমারি প্রতিবেদনও নেই। তাই আইনি বাধ্যবাধকতা মেনে নতুন এলাকাগুলো যুক্ত করে হয়তো ৩০-৩৫টি সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাস করতে হবে। এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসি ৫০টি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করেছে। ওই সময় ১৭ শতাংশ আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়। নির্বাচন কমিশন ৮৭টি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছিল। পরে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৫০টির আসন সীমানা নবম সংসদের মতোই রাখা হয়েছে।’ ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ২০০৮ সালের সীমানা নির্ধারণে যেসব আসনে প্রশাসনিক অখণ্ডতা রক্ষিত হয়নি বা ভৌগোলিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল সে রকম ৫০টি আসনে ২০১৩ সালে পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকার সংসদীয় আসনের বেশির ভাগেই ২০০৮ সালের সীমানা বহাল রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় নানা জটিলতা আছে এমন কিছু আসনের সীমানায় আংশিক পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০০৮ সালে ব্যাপক সীমানাবিন্যাস হওয়ায় ২০১৩ সালে বড় কোনো বিভাজন করা হয়নি। সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ অনুযায়ী প্রশাসনিক সুবিধা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৫০ আসনে পরিবর্তন করা হয়।

সর্বশেষ খবর