বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

লাঠিপেটায় কোটা সংস্কার কর্মসূচি পণ্ড

আটক অর্ধশতাধিক, আহত ২০

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

লাঠিপেটায় কোটা সংস্কার কর্মসূচি পণ্ড

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসসহ (বিসিএস) সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে পুলিশ। গতকাল বেলা পৌনে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত পুলিশ হাই কোর্ট মোড় সংলগ্ন এলাকায় টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে পণ্ড করে দেয় এ আন্দোলন।

৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন করছিলেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন  আন্দোলনকারী। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারীকে আটক করেছে। প্রতিবাদে আগামী ১৮ মার্চ সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা ছিল। ঘটনাস্থল থেকে আমরা কিছু আন্দোলনকারীকে আটক করেছি। এখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জানা গেছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে রওনা হয়।

 মিছিলটি হাই কোর্ট  মোড়ে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেয়। আন্দোলনকারীদের আশা ছিল আধা ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সেখানে এসে তাদের আশ্বস্ত করবেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ তাদের ওপর লাঠি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলন। বিনা উসকানিতে পুলিশ হামলা করছে অভিযোগ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রেদওয়ান ইসলাম বলেন, ?পুলিশ আমাদের ওপর বিনা কারণে হামলা চালিয়েছে। আমরা কোনো সহিংস আন্দোলন করতে যাইনি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। আমাদের বন্ধু সোহরাব, জহির, আরিফসহ অন্তত ৫০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বর্তমানে তারা শাহবাগ থানায় আছে। আহতদের অনেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এক পর্যায়ে হাই কোর্টের সামনে বাধার সম্মুখীন হয়ে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল। প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান শেষে আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে এ দিনের আন্দোলন শেষ করে। আন্দোলনকারীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬% থেকে ১০% এ নিয়ে আসা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য থাকা পদসমূহে মেধায় নিয়োগ দেওয়া; কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা নয়; সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণ করা এবং চাকরি নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা।

সর্বশেষ খবর