মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

এবার বস্তার ভিতরেই হবে আলুর চাষ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

এবার বস্তার ভিতরেই হবে আলুর চাষ

কৃষি জমির পাশাপাশি এবার বস্তায় চাষ হবে আলু। বাসার ছাদে বা বাড়ির উঠানে বস্তা রেখে আলু চাষ করা যাবে। এ পদ্ধতিতে আলু চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে কিশোরগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ। এই বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে  আবাদি জমির পরিমাণ বছরে প্রায় ১ শতাংশ হারে কমছে, যা বসতবাড়ি ছাড়াও অন্যান্য অকৃষি খাতগুলো গ্রাস করছে। শহরায়নের ফলে বিল্ডিং বাড়ির সংখ্যাও দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে। এক্ষেত্রে বাড়ির ছাদকে ফসল চাষের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি। শহর বা উপশহর অঞ্চলে অনেক পরিবারই আছে যারা সখের বশে বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ফল, শাকসবজি বা বিভিন্ন ওষধি ফসল চাষ করেন। এসবের পাশাপাশি বস্তায় আলু চাষ একটি সম্ভাবনাময় পদ্ধতি, যা থেকে একটি পরিবারের প্রায় ছয় মাসের আলুর চাহিদা পূরণ হওয়া সম্ভব। কিশোরগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এবারই প্রথম বস্তায় আলু চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। চাষের পদ্ধতি বিষয়ে তিনি জানান, নভেম্বর মাসের শুরুতেই বেলে দোআঁশ মাটি সংগ্রহ করে দুই দিন শুকিয়ে গুঁড়ো করতে হবে। এরপর প্রতি ১০ কেজি মাটির জন্য ইউরিয়া সার ৮ গ্রাম, টিএসপি ১২ গ্রাম, এমওপি ১০ গ্রাম, জিপসাম ৩ গ্রাম, মোট মাটির ৫ ভাগের ১ ভাগ পচা গোবর সার এবং মাটির ১৫ ভাগের ১ ভাগ ছাই মিশিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এরপর এ মাটি চটের বস্তায় ভরতে হবে। জিগ জ্যাগ সিস্টেমে বস্তার চারপাশে আলু বীজের আকৃতি অনুযায়ী কাটতে হবে ও কাটা স্থানে বস্তার ভিতরে গর্ত তৈরি করতে হবে। তিন-চারটি গজানো বাড (চোখ) বিশিষ্ট আলুবীজ বস্তার গর্তের মুখে সামান্য ভিতরে স্থাপন করতে হবে। আবার বস্তাভর্তি মাটির ওপরে নির্দিষ্ট দূরত্বে তিন-চারটি আলুর বীজ পুঁতে রাখতে হবে। সুষমভাবে পানি সেচ দেওয়ার সুবিধার্থে বস্তার চেয়ে কম উচ্চতা বিশিষ্ট ৩ ইঞ্চি ব্যাসের প্লাস্টিক পাইপ, যার নিচের প্রান্ত ক্যাপ দিয়ে আটকে পাইপটির গায়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে বেশ কিছু ছিদ্র করতে হবে। যাতে শুধু পাইপের ভিতর পানি ঢাললে সব আলুর গাছের গোড়ায় রস যেতে পারে।

পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই বস্তার প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে আলুর দুই-তিনটি করে চারা বের হবে। এরপর পাইপের মাধ্যমে ওপরে ও চারপাশে ভালোভাবে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। এভাবে যখনই মাটিতে রসের অভাব হবে তখনই সেচ দিতে হবে। চটের ব্যাগ ব্যবহার করলে মাটি দীর্ঘদিন রস ধরে রাখতে পারবে। ৮০-৯০ দিনের মধ্যে আলু সংগ্রহ করার উপযোগী সময়। এক্ষেত্রে বস্তাপ্রতি ১৫-২০ কেজি আলু অনায়াসেই পাওয়া সম্ভব। এভাবে বিষমুক্ত আলু যেমন পাওয়া যাবে, অন্যদিকে বস্তাভর্তি আলুর গাছ একটি সবুজ দৃশ্য ধারণ করবে, যা ছাদের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেবে।

সর্বশেষ খবর