শুক্রবার, ২৩ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

তীব্র যানবাহন সংকট ভোগান্তিতে যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তীব্র যানবাহন সংকট ভোগান্তিতে যাত্রীরা

রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে গতকাল ছিল গণপরিবহনের তীব্র সংকট। গাড়িতে উঠতে রীতিমতো লড়াই। শাহবাগ থেকে তোলা ছবি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় সরকারি উদ্‌যাপন কর্মসূচিতে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোয় ছিল যানবাহন সংকট। পুলিশি নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রধান সড়কে যানবাহন ছিল না বললেই চলে। ফলে নগরীর বাসিন্দাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে চরমভাবে। নগরীতে গণপরিবহন কম থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন অনেকেই। প্রধান সড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও অলিগলিতে ছিল উল্টো চিত্র। সেখানে ছিল তীব্র রিকশা-গাড়ির জট। ফলে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত যাত্রীদের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

গতকাল ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজার হয়ে বাংলামোটর দিয়ে শাহবাগ এলাকার সড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও বড় কোনো যানজট হয়নি। এসব সড়কে যান চলাচলও কম ছিল। যানবাহন কম হওয়ায় মানুষকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সড়কে যান চলাচল কম হওয়ায় অনেক মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। শাহবাগ মোড়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছাতে শত শত যাত্রী রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। একটি বাস এলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন গাড়িতে ওঠার জন্য। তীব্র ভিড়ে পুরুষ যাত্রীরা অনেকে উঠতে পারলেও মহিলাদের ভোগান্তি ছিল চরমে। বাস না পেয়ে রিকশা বা অটো সিএনজি পেলেও অনেকেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কিন্তু পুলিশি নিয়ন্ত্রণের কারণে এসব যানবাহনও ছিল খুব কম।

রাজধানীর নয়টি স্থান থেকে ৫৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শোভাযাত্রা করে রওনা হন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের পথে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও ব্যানার নিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ আয়োজনে বেশকিছু এলাকায় যান চলাচল সীমিত করায় স্টেডিয়াম ও চারপাশের সড়কগুলোয় যানবাহন চলাচলে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। রামপুরা, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইলে গণপরিবহন ছিল একেবারেই কম। সড়কে সিটিং সার্ভিসের বাসগুলোও দেখা যায়নি। কাকরাইল থেকে মৎস্য ভবন, নাবিস্কো, সাত রাস্তা ও মগবাজারের পথ ছিল প্রায় ফাঁকা। দুপুরের দিকে সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় যানবাহন চলাচল ছিল খুবই কম।

 মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের চিত্রও ছিল একই রকম। হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে গুলিস্তানগামী মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারগুলোকে চানখাঁরপুলের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পল্টন ও প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কারণে নগর ভবনের সামনের সড়ক, গোলাপশাহ মাজার ও গুলিস্তানে তৈরি হয় যানজট।

বিকাল ৩টার দিকে মহাখালী রেলক্রসিং এলাকায় টঙ্গী ও উত্তরাগামী এবং ফার্মগেট, শাহবাগ ও গুলিস্তানগামী যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ফার্মগেটের কোনো বাস আসতে দেখেননি বলে জানালেন এক যাত্রী। তবে গাবতলী, মিরপুর ও শ্যামলীগামী যাত্রীরা গন্তব্যে গেছেন বেশ নির্বিঘ্নে। শ্যামলী হয়ে শিয়া মসজিদগামী লেগুনা চলাচল করেছে কোনো যানজট ছাড়াই। মহাখালী হয়ে সাভার গাবতলীগামী আলিফ, অগ্রদূত, বৈশাখী পরিবহনের বাসগুলোও বিকাল পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে নির্বিঘ্নে চলেছে বলে চালকরা জানিয়েছেন। মিরপুর ১২ থেকে ফার্মগেটের পথে অন্য দিনের মতো যানজট ছিল না। বরং রাস্তা ছিল তুলনামূলক ফাঁকা। ওই সময় মোহাম্মদপুর থেকে ধানমন্ডি হয়ে সায়েন্সল্যাবের দিকে যেসব গাড়ি যাচ্ছিল, সেগুলোকে যানজটের মধ্যে পড়তে হয়। অন্যদিকে নীলক্ষেত থেকে সায়েন্সল্যাব হয়ে মিরপুর রোডে গাড়ির চাপ ছিল কম। নীলক্ষেত মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দুপুর ২টা থেকে ডিউটি করছি। রাস্তায় গাড়ি বেশি নেই। ফলে যানজটও নেই।’

সর্বশেষ খবর