বুধবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

গুলি খেয়ে চিৎকার করতে থাকে

পরিদর্শক জালাল হত্যায় জবানবন্দি

সাখাওয়াত কাওসার

রাজধানীর মিরপুরে মধ্য পীরেরবাগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক জালাল উদ্দীন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন নূর মোহাম্মদ মানিক নামের এক যুবক। গত রবিবার রাতে মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গ্রেফতারের পরদিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট খুরশিদ হকের আদালতে হত্যাকাণ্ডের পুরো বর্ণনা দেন তিনি। জানান, গুলি খেয়ে লোকটা ‘স্যার স্যার’ বলে চিৎকার করতে থাকে। পরদিন টিভি দেখেই তিনি জানতে পারেন নিহত ওই ব্যক্তি ডিবির পরিদর্শক জালাল উদ্দীন। এর আগে এই ঘটনায় সাক্ষী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হাসান মাহমুদের স্ত্রী তানিয়া বেগম। গ্রেফতার মানিকের বাবার নাম মৃত হুমায়ূন কবির। গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট সদরের সরুই। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মানিক বলেন, ১৯ মার্চ হাসানের বন্ধু সাইদুলের সঙ্গে ইয়াবা খাওয়ার জন্যই মধ্য পীরেরবাগের ১০৫/২/এ নম্বর হোল্ডিংয়ে হাসানের বাসায় যাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে। ইয়াবা খাওয়ার পরই সাইদুল চলে যায়। আমি আর হাসান বাসার দরজার সামনে বসে ছিলাম। হঠাৎ হাসানের স্ত্রী এসে আমাদের বলে কারা যেন টর্চ মারছে। এই বলে সে ঘর ও পাকঘরের লাইট বন্ধ করে দেয়। কিছু সময়ের মধ্যেই আমরা দেখি একজন লোক ছাদে ওঠার চেষ্টা করছে। এ সময় আমি আর হাসান মিলে লোকটার মাথায় ইট মারি। অন্ধকারে লোকটারে চিনতে পারি নাই। এর মধ্যে হাসান তার বাসা থেকে একটি পিস্তল নিয়ে এসে লোকটাকে গুলি করতে থাকে। গুলি খেয়ে লোকটা স্যার, স্যার বলে চিৎকার করতে থাকে। পরে আমি আর হাসান ছাদের দক্ষিণ পাশ দিয়ে পালিয়ে যাই। আমি আমার বাসায় যাই। পরের দিন টিভিতে দেখি, যে লোকটা মারা গিয়েছে ওই লোকটা পুলিশের লোক। গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর মিরপুরের বাসা থেকে সার্জেন্ট মামুনুর রশীদ ও সোহেল রানার সরকারি অস্ত্র দুটি চুরি হয়। খোয়া যাওয়া ওই অস্ত্র উদ্ধারে ডিবি পশ্চিমের একটি দল গত ১৯ মার্চ মধ্য পীরেরবাগের একটি বাসায় অভিযানে গেলে নৃশংসভাবে খুন হন পরিদর্শক জালাল উদ্দীন। ডিবির (পশ্চিম) অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেল এ প্রতিবেদককে বলেন, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই সে হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে নেয়। সে নিজেই বলেছে তার নামে মিরপুর থানায় দুটি ইয়াবা মামলা রয়েছে। গত বছর সে দুই মাস জেলও খেটেছে। গ্রেফতারের পরদিন সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মানিক অস্ত্র চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে আমাদের ধারণা। ওই মামলায়ও তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হবে এবং রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।

সর্বশেষ খবর