শিরোনাম
সোমবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
কোটা সংস্কার আন্দোলন

গুজব রটনাকারীদের খুঁজছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মৃত্যু ও রগ কাটার মতো উসকানিমূলক তথ্য রটনাকারীদের খুঁজছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) অপপ্রচার করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যারা সহিংস করে তুলেছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে দুই শতাধিক অ্যাকাউন্টকে সন্দেহ করা হয়েছিল। তবে গত তিন দিনের তদন্তে এই সংখ্যা ৩০টিতে নেমে এসেছে। এ ব্যাপারে ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপ-কমিশনার আলিমুজ্জামান বলেন, সন্দেহভাজন অ্যাকাউন্টগুলো পর্যালোচনা করে উসকানিমূলক তথ্য প্রচারকারী ও গুজব রটনাকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। গত বুধবার রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের পক্ষ থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে (আইসিটি) রাজধানীর রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে কোনো আসামির নাম-ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি। তবে এর সঙ্গে বিভিন্ন ফেইসবুক আইডির নাম এবং পোস্টও যুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ফেসবুক পেইজ, ফেসবুক ও ট্যুইটারে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এবং কিছু অনলাইন পোর্টালের তথ্য তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, অনেক সতর্কতার সঙ্গে এই মামলার তদন্ত চলছে। কারণ ফেক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও একজন আরেকজনের নাম ব্যবহার করেও উসকানি ছড়াতে পারে। সেক্ষত্রে একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিও ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই প্রকৃত অপরাধীকে ধরার চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে যারা একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এই ঘৃন্য কাজ করেছে তাদেরকেই আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

?সাম্প্রতিক সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরগরম ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি ফেসবুকেও সরব থেকে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ায়। বিশেষ করে আন্দোলনের মধ্যেই ফেসবুকে আবু বকর নামে একজনের মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়, হলে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে আন্দোলনকারীদের মরধর করা হচ্ছেসহ সর্বশেষ গুজবটি রটে গত মঙ্গলবার রাতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে এক ছাত্রীকে মারধর ও তার পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফত জাহান এশার বিরুদ্ধে। এরপর ওই রাতে হঠাৎ করে ফেসবুকে একটি রক্তাক্ত পায়ের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বাস্তবে ফেসবুকের এসব তথ্যের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। তবে ফেসবুকের এসব গুজব আন্দোলনকারীদের ওপর কখনো কখনো প্রভাব ফেলে এবং আন্দোলন নতুন মাত্রা পায় বলে মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। 

এদিকে কোটা আন্দোলনে উসকানিমূলক অপপ্রচারের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে করা মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৩ মে দিন ধার্য করেছে আদালত। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম এ আদেশ দেন। এদিন মামলার এজাহার আসলে আদালত তা দেখে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ওই দিন ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি, পেইজ ও গ্রুপ, ইউটিউব, টুইটার, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ব্লগ, ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারে সঙ্গে সন্দেহভাজনদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ছবি সংবলিত ফেসবুকের বেশ কয়েকটি স্ক্রিনশটসহ মোট ৭২ পাতার স্ক্রিনশট যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রক্তভেজা টুয়েন্টিফোর ডটকম, মনিটরবিডি ডট নিউজ, বিডিট্রিবিউন এ প্রকাশিত রিপোর্টের স্ক্রিনশটও রয়েছে। মামলায় কোটা আন্দোলনের বাইরেও পুলিশের পোশাকপরা ছবিতে মাথা কেটে ডাইনোসর প্রাণীর ছবি লাগানোর অভিযোগে একটি ব্লগের বিরুদ্ধে এবং জনৈক মো. রিয়াজুল হকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভুয়া ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে পোস্ট করার অভিযোগ আনা হয়।

সর্বশেষ খবর