বুধবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

চিড়িয়াখানায় জেব্রা পরিবারে নতুন অতিথি

মোস্তফা কাজল

চিড়িয়াখানায় জেব্রা পরিবারে নতুন অতিথি

জাতীয় চিড়িয়াখানার বিশালদেহী জেব্রা শ্রাবণীর পরিবারে এসেছে নতুন     অতিথি। গতকাল ভোরে  শ্রাবণীর গর্ভে জন্ম নেয় বৈশাখী নামের জেব্রা শাবক। আট বছর বয়সী শ্রাবণীর জন্ম হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাতে। ২০১১ সালের জুলাই মাসে এ প্রাণিটিকে দরপত্রের মাধ্যমে কেনা হয়। এই গড় আয়ুষ্কাল ৩০ থেকে ৩২ বছর। কিন্তু আবদ্ধ অবস্থায় খাঁচায় বা বেষ্টনিতে ২৮ থেকে ৩০ বছর বেঁচে থাকে। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আবদ্ধ অবস্থায় এসব প্রাণী সাধারণত বাচ্চার জন্ম দেয় না। কিন্তু ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় এমন ধরনের প্রাণীর শাবক জন্ম দেওয়ায় নতুন ইতিহাসের জন্ম দিল শ্রাবণী। এটা সম্ভব হয়েছে অনুকূল পরিবেশের কারণে। বর্তমানে জেব্রার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মতো।  গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় চিড়িয়াখানার জেব্রার বেষ্টনিতে গিয়ে দেখা গেছে, বাচ্চা নিয়ে খুশিতে আটখান দক্ষিণ আফ্রিকার এই প্রাণীটি। দুপুর ১২ টায় পরিচর্যাকারী কুদ্দুস মিয়া সেখানে ঘাস ও দানাদার খাবার খেতে দেয়। খাবার পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে মা শ্রাবণী ও শাবক বৈশাখী।

বর্তমানে চিড়িয়াখানায় চারটি জেব্রা রয়েছে।

পরে খাবার খেয়ে বেষ্টনির ভিতরের প্রকোষ্টে ঢুকে পড়ে মা জেব্রা। মায়ের সঙ্গে শাবকটিও সেখানে যায়। দুপুর ১টায় প্রকোষ্ট থেকে বের হয়ে ছুটোছুটি শুরু করে সদ্যজাত শাবকটি। পরে নরম মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি খায়। এসব দেখে বেশ আনন্দ পায় চিড়িয়াখানায় আসা অগণিত দর্শক। জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার পুষ্টি কর্মকর্তা আবু সাঈদ কামাল বাচ্চু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এক সময় জেব্রাটি বেষ্টনির মধ্যে দৌড়-ঝাঁপ করতো। একটু গরম আবহাওয়া হলেই ভিতরের চৌবাচ্চায় নেমে থাকতো। মানুষ দেখলে লজ্জা পেত। এখন সদ্যজাত শাবক পেয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত মা জেব্রাটি। চারদিকে তার সতর্ক চাহনি। অপরিচিত কাউকে আসতে দেখলে আগলে রাখে শাবককে। তিনি আরও জানান, আফ্রিকার বন-জঙ্গলে দেখা যায় জেব্রা। প্রায় ২৩০ থেকে ২৩৫ কেজি ওজনের এ প্রাণীর দেহ। স্ত্রী অপেক্ষা পুরুষের ওজন বেশি হয়। নরম এদের শরীর। এ প্রাণী দেখতে অনেকটা ঘোড়ার মতো। এদের গায়ে পিঠের উপরের দিক থেকে পেটের নিচ দিকে কালো সাদা দাগ আছে। প্রজাতির ওপর ভিত্তি করে দাগের ভিন্নতা থাকে। এসব দাগ দেখতে নান্দনিক হয়। এ প্রাণী লম্বায় ৩ থেকে ৪ মিটার হয়। উচ্চতা হয় সাড়ে তিন থেকে সাড়ে ৪ মিটার। জেব্রা তৃণভোজী প্রাণী। সবুজ ঘাস, শাকসবজি এদের প্রধান খাদ্য। ১২ মাস গর্ভধারণের পর একটি করে বাচ্চার জন্ম দেয়। শিশুরাই জেব্রার সবচেয়ে বেশি ভক্ত। নতুন অতিথিকে দেখতে ভিড় হয় বেষ্টনির সামনে। সব মিলিয়ে দুর্লভ  জেব্রাকে ঐতিহ্য বলে মনে করছেন জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ খবর