বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

কৃষিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন জাতের ধান

মর্তুজা নুর, রাবি

কৃষিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন জাতের ধান

প্রচলিত ধানের তুলনায় ফলন হবে বেশি। শীষ থেকে খুব সহজে ঝরে পড়বে না। ধানটিতে ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট রোধক জিন বিদ্যমান। এমন বেশকিছু নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে বাংলাদেশে নতুন জাতের আরও একটি ধান উদ্ভাবিত হয়েছে।

বিরি, হীরা, সোনার বাংলা ইত্যাদি কত জাতের ধানের নামই তো জানা। এবার নতুন উদ্ভাবিত ধানটির নাম দেওয়া হয়েছে রাজশাহী  বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে মিলিয়ে, ‘রাবি ধান১’। উদ্ভাবক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরই এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক। ইতিমধ্যেই ‘রাবি ধান১’-এর স্বীকৃতি দিয়েছে ন্যাশনাল সিড বোর্ড ও বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ কাউন্সিল (বিএআরসি)। এখন বাজারজাত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে ধানটি। ধানটির উদ্ভাবক অধ্যাপক আমিনুল হক বলেন, ‘২০১৪ সালে এই ধানের অরিজিন ফিলিপাইন থেকে আনা হয়। তখন থেকেই গবেষণা চালিয়ে আসছিলাম। অনেক পরিশ্রমের ফলে ধানটি উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। আশা করি এর মাধ্যমে কৃষক সফলতার মুখ দেখবেন।’ ধানের নাম ‘রাবি ধান১’ কেন দেওয়া হলো— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নতুন ধান আবিষ্কারের ইতিহাস এটাই প্রথম। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হওয়ার কারণেই আমার পক্ষে এটা সম্ভব হয়েছে। তাই যত দিন এই ধান থাকবে তত দিন তার সঙ্গে রাবির নাম জড়িয়ে থাকবে। রাবির নাম চিরস্মরণীয় করে রাখতেই ভালোবাসার জায়গা থেকে এমন নাম রাখা।’ অধ্যাপক আমিনুল হক জানান, আমনের জাত ‘ব্রি৩৯ ধান’-এর কাছাকাছি জাত ‘রাবি ধান১’। চিকন মিনিকেট চাল উৎপন্ন হবে এই ধান থেকে; যার বাজারমূল্য উন্নত মিনিকেট চালের সমান। তবে ব্রি৩৯-এর থেকে ১৫ দিন আগেই রাবি ধান১০এর আবাদ উঠবে। ব্রি৩৯-এর আবাদ উঠতে সময় লাগে ১৪৫ দিন। সেখানে ‘রাবি ধান১’-এর আবাদ উঠতে লাগবে ১৩০ দিন। নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করতে হলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে তা লাগিয়ে দেখা হয় এবং ধানটির বৈশিষ্ট্য নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখেন ন্যাশনাল সিড বোর্ড ও বিএআরসির সদস্যরা। ফল ও গুণ ঠিক থাকলে তবেই মেলে স্বীকৃতি। সেই হিসেবে ২০১৫ সালের আমন মৌসুমে প্রথমবারের মতো ‘রাবি ধান১’ দেশের চারটি স্থানে ও ২০১৬ সালে তিনটি স্থানে পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়। দুবারই ব্রি৩৯-এর থেকে বেশি ফলন দেয়। সেইসঙ্গে চাষাবাদে বেশি উপযোগী হিসেবে প্রমাণিত হয়। বর্তমানে এর স্বীকৃতি মেলে।

এই ধান চাষ করে বেশকিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন চাষিরা। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের আলু চাষিরা আমন মৌসুমে এই ধান ঘরে তুলে আলুর আবাদ শুরু করার সময় পাবেন। এই ধানের উদ্ভাবক আরও জানালেন, এই ধানের রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের থেকে অনেক কম হবে। এতে কৃষকের কীটনাশক খরচ অনেকটা সাশ্রয় হবে।

সর্বশেষ খবর