শিরোনাম
শনিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

পুঁটলি খুলতেই বেরিয়ে এলো শিশুর লাশ

প্রতিদিন ডেস্ক

রাজশাহীতে পুঁটলি খুলতেই মিলল শিশুর লাশ, জামালপুরে ধানখেতে পাওয়া গেছে আরেক শিশুর লাশ ও সোনারগাঁয়ে পানির ট্যাংকিতে পাওয়া গেল শিশুর লাশ।

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বাড়ির মাচার নিচে পুঁটলি খুলতেই মিলল শিশুর লাশ। সাড়ে ৩ বছরের শিশু তামিমকে অপহরণের পর হত্যা করে রাতে বাড়ির মাচার নিচে পুঁটলিতে মুড়িয়ে রাখা হয়। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার রাতে ঘটেছে গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা রেলগেট বাইপাস এলাকায়।

হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু তামিমের বাবা মো. রাসেল জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তিনি কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তখন তার ছেলে বাড়িতে ছিল। পরে ছেলে খেলাধুলার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। দুপুরে তামিমের মা তাহেরা বেগম সন্তানের খোঁজ করতে থাকেন। সারা দিন আশপাশে খুঁজে কোথাও না পেয়ে বাবা রাসেলকে জানালে আত্মীয়স্বজনের বাড়িসহ আশপাশের পুকুরেও খোঁজখুঁজি করা হয়। বিকালের পর থেকে শিশুটিকে পাওয়ার জন্য মাইকিংও করা হয়। রাতে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আলতাফ হোসেনকে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে শিশু রাসেলের ফুফু রুবিনা খাতুন বাড়ির পাশে মাচার নিছে শিশু তামিমের লাশ পুঁটলিতে মোড়ানো পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর জানাজানি হয় বিষয়টি। তামিমের ফুফু রুবিনা বলেন, মাচার নিচে কিছু একটা পড়ে আছে বলে দেখতে পান তিনি। এরপর টর্চলাইট জ্বালিয়ে মাচার নিচে দেখতে পান সবুজ জালে মোড়ানো শিশু তামিমের লাশ। তামিমের পিতা রাসেল জানান, তামিমের মাথায় আঘাতের চিহ্ন  দেখে মনে হচ্ছে ইট কিংবা লোহা দিয়ে মাথায় আঘাত করে মেরে ফেলা হয়েছে। ছেলেকে উদ্ধারের সময় গলায় দড়ি ও শরীরে গাছের ছাল জড়ানো ছিল। গোদাগাড়ী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলতাফ হোসেন বলেন, শিশু হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জানা যায়, শিশু তামিমের পিতা একজন দিনমজুর। কখনো অটো চালিয়ে আবার কখনো রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এলাকাবাসীর ধারণা, আশপাশের লোকজনই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে লাশ ফেলে রেখে গেছে।

জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুর সদর উপজেলার বাঁশচড়া ইউনিয়নের ঝাউলা গ্রামে অপহরণের পর ৫ বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জামালপুর সদরের নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর আনসার আলী জানান, ঝাউলা গ্রামের ওমান প্রবাসী ইউসুফ হোসেনের ৫ বছরের শিশুপুত্র লাবিব হোসেনকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী মৃত আবদুর রহমানের পুত্র ফয়সাল খন্দকার। ঘটনার এক ঘণ্টা পর অপহরণকারীরা শিশু লাবিবের মাকে ফোন করে জানায়, তার পুত্র ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকায় ভালো আছে। পুত্রকে নিতে ওই স্থানে মাকে যেতে বলে অপহরণকারীরা। এরপর শিশুটির মা লাভলী বেগম নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রে সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রাত ২টায় নিজ বাড়ির পাশের একটি ধানখেত থেকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নিখোঁজের ৪ দিন পর পানির ট্যাংকি থেকে আনিছা (৮) নামে এক তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আবদুল মালেকের নির্মাণাধীন বাড়ির পানির ট্যাংকি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আনিছা উলুকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নারায়ণগঞ্জের জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের দাউদেরগাঁও গ্রামের সৌদি প্রবাসী আনিছুর রহমানের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে আনিছা আক্তার। গত সোমবার সকালে প্রাইভেট পড়তে এসে নিখোঁজ হয়।

 বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের ৪ দিন পর শুক্রবার সকালে উলুকান্দি গ্রামের আবদুল মালেক মিয়ার নির্মাণাধীন দ্বিতীয়তলা ভবনের পানির ট্যাংকি থেকে দুর্গন্ধ আসতে থাকলে এলাকাবাসী স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে পুলিশে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পানির ট্যাংকি থেকে নিখোঁজ স্কুলছাত্রী আনিছার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা ওই ছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পানির ট্যাংকিতে ফেলে পালিয়ে যায়। শ্বাসরোধে হত্যার কারণে ওই ছাত্রীর জিহ্বা বের হয়ে গিয়েছিল।

সর্বশেষ খবর