বুধবার, ১৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট চাই

দুর্নীতি কমানোর দিক নির্দেশনা প্রয়োজন

—কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ

রুহুল আমিন রাসেল

দুর্নীতি কমানোর দিক নির্দেশনা প্রয়োজন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আসছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেটে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি কমানোর দিকনির্দেশনা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)-এর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। তিনি আগামী বাজেটে বিনিয়োগ ও অবকাঠামো খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বড় লোক নয়— দেশের উন্নয়নের জন্য বৈষম্য দূরীকরণের বাজেট প্রণয়ন করতে হবে। বিদেশে অবস্থানরত কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ গতকাল টেলিফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আরও বলেন, সামনে নির্বাচন, তাই বাজেটও হবে নির্বাচনমুখী। উন্নয়নশীল হওয়ার পথে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের এখন প্রয়োজন প্রচুর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। প্রয়োজন দ্রুত অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন। তাই বাজেটে দ্রুত বিনিয়োগ ও অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে জোর দিতে হবে। বাজেট প্রণয়নে জড়িত ব্যবসায়ীদের মনে রাখতে হবে— ব্যবসায়ীরাই এদেশের প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন। ব্যবসায়ীদের সুখ-দুঃখের কথাও বাজেটে বিবেচনা করতে হবে। কর্পোরেট কর কমানোর সুখবর ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে আশা করছি— এবারও ভালো বাজেট হবে। কর্মসংস্থান ও শিক্ষা খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন তুলে ধরে দেশের এই শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, আমাদের দেশে এখন সবচেয়ে বেশি দরকার কর্মসংস্থানমুখী বিনিয়োগ। আবার কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষ জনসম্পদ বাড়াতে নজর দিতে হবে শিক্ষায়। দেশে দক্ষ জনসম্পদ হলে বিনিয়োগ আসবেই। এতে দারিদ্র্য বিমোচন যেমন কমবে, তেমনি কমবে আয়-বৈষম্যও। আসছে বাজেটে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এই চার খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদানের তাগিদ দিয়ে বেসরকারি স্টান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যুৎ তৈরি হয় কিন্তু সঞ্চালন লাইনের অভাবে ঘরে ঘরে পৌঁছায় না। সামনের দিনগুলোতে শিল্প-কারখানায় এলএনজি গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এই গ্যাসের দাম যেন শিল্প সহায়ক হয়, সেই দিকে বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে।

কাজী আকরাম বলেন, এই সরকার ব্যবসা ও ব্যবসায়ীবান্ধব সরকার। তাই সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে ব্যবসায়ীদের জন্য সুনজর আছে। ব্যবসায়ীদের সহায়তা নিয়েই সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতি বছর বাজেটের আকার যেমন বাড়ছে। তেমনি রাজস্ব আয়ও বাড়ছে। তবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার আরও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে এবারও উন্নয়ন বাজেট হবে বলে আশা করছি।

দেশের এই শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, সরকার নির্বাচন সামনে রেখে আগামী অর্থবছরের যে বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে, তাতে যেন সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি কোনো চাপ না পড়ে। জনগণের কাছ থেকে চাপ দিয়ে কর আদায় করা যাবে না। কারণ, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এই সরকার ২০০৯ ও ২০১৪ সালে পরপর দুই দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর যে সব বাজেট দিয়েছে, দেশের ব্যবসায়ী সমাজ, তা ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন। অতীত বাজেটের ধারাবাহিকতায় এবারও উন্নয়নমূলক বাজেট সমগ্র দেশবাসীর মতো আমিও প্রত্যাশা করছি। এসব কিছু বিবেচনায় নির্বাচনের আগে এই বাজেট অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

দেশে চলমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সুফল কাজে লাগাতে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির উপদেষ্টা কাজী আকরাম বলেন, এবারের বাজেট হতে হবে— বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় আরেকধাপ এগিয়ে যাওয়ার জন্যে। কারণ আমাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর এখনই সুসময়। দারিদ্র্য বিমোচনে বিনিয়োগ দরকার। এ জন্য ভৌত-অবকাঠামো খাতে নজর দিতে হবে বেশি। ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য কমানোর জন্য বিনিয়োগ হবে। যেভাবে দেশ এগোচ্ছে, যেভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে তা দেখে বিদেশিরা নিশ্চয়ই বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগ করবেই না কেন, এখানে ১৬ কোটি মানুষ বসবাস করে। যুবশক্তি আছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে। কর্মঠ মানুষ আছে। সামনের নির্বাচনে তাদের একটা প্রভাবও থাকবে। সে সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেট হতে হবে অধিকতর গণমুখী।

সর্বশেষ খবর