মঙ্গলবার, ২২ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডিলার ছাড়া সোনা আমদানি নয়

যা আছে আমদানি নীতিমালায়

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

ডিলার ছাড়া সোনা আমদানি নয়

অনুমোদিত ডিলার ছাড়া অন্য কেউ সোনা আমদানি করতে পারবেন না। এই ডিলার নির্বাচনের কাজ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনুমোদিত ডিলার সোনার বার ছাড়া অলঙ্কার বা অন্য কোনোভাবে সোনা আমদানি করতে পারবেন না। সরাসরি সোনার বার প্রস্তুতকারী/সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সোনার বার আমদানি করতে হবে।

দেশের অভ্যন্তরীণ স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদা পূরণে অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে সোনা আমদানির এই নতুন পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের খসড়া স্বর্ণ নীতিমালায়। সম্প্রতি খসড়া নীতিমালাটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য। আগামীকাল এটি উপস্থাপন করা হতে পারে।

রপ্তানি নীতিমালার খসড়া তৈরির বিষয়ে সুবিধাভোগীদের নিয়ে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) প্রাণেশ রঞ্জন সূত্রধর। জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, আমরা শুধু সোনা আমদানির বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছি। খসড়া নীতিমালায় সোনা আমদানি, রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে যা প্রয়োজন তার সবকিছুই উল্লেখ করা হয়েছে। এ কারণে সমন্বিত খসড়াটি রপ্তানি শাখা থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।  খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, অনুমোদিত ডিলার সোনার বার আমদানির সময় বন্ড সুবিধা গ্রহণ করে সোনা আমদানি করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সোনার বার আমদানি করার জন্য ডিলারকে অবশ্যই আমদানি নীতি আদেশ এবং কাস্টমস অ্যাক্টের বিধান অনুসরণ করে বন্ড লাইসেন্স নিতে হবে। স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদের চাহিদার ভিত্তিতে অনুমোদিত ডিলার স্বর্ণালঙ্কার আমদানির উদ্যোগ নেবেন। স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত চাহিদার বিপরীতে সোনার বার আমদানির আগে চালানভিত্তিক সম্ভাব্য বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের পরিমাণ বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করে ওই ব্যয় পরিশোধে অনাপত্তি প্রকাশ করবে। বৈদেশিক মুদ্রা বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনাপত্তির বিষয় অবহিত করবে। নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, মূসক নিবন্ধিত প্রকৃত স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী অনুমোদিত ডিলারের কাছ থেকে সোনার বার কিনতে পারবেন। তবে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। অনুমোদিত ডিলার কর্তৃক সোনার বার আমদানি ও বিক্রির সময় প্রযোজ্য শুল্ককর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে। ডিলার ও স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর ব্যবসায়িক কার্যাবলী সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কাস্টমস, এক্সাইজ ও মূসক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কাস্টমস অ্যাক্ট ও মূল্য সংযোজন কর আইন এবং এ সংক্রান্ত প্রণীত বিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ও পরীবিক্ষণ করা হবে। স্বর্ণ, হীরক, রৌপ্য, অন্যান্য মূল্যবান ধাতু এবং অলঙ্কারের পাইকারি ও খুচরা বাজারের ক্রয়-বিক্রয়ের সর্বক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ‘ইলেকট্রনিক্স ক্যাশ রেজিস্টার’ (ইসিআর)/ ইলেকট্রনিক্স ট্রান্সফার ব্যবস্থা/মূসক চালানের ব্যবহার প্রচলন করতে হবে। গ্রাহকের কাছ থেকে রিসাইকেল্ড সোনা কেনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বিধানের লক্ষ্যে উক্ত গ্রাহক/বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্টের কপি এবং পূর্ণাঙ্গ যোগাযোগের ঠিকানা সংরক্ষণ করতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী সরকার সোনার জন্য নিজস্ব মান প্রণয়ন করবে। স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে হলমার্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক হবে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়মানুযায়ী স্বর্ণ/স্বর্ণালঙ্কারে খাদের পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করতে হবে। সোনা আমদানির পাশাপাশি রপ্তানির বিষয়েও সরকারের প্রণোদনা রয়েছে নীতিমালায়। নীতিমালা অনুযায়ী মূসক ও ট্যাক্সের আওতায় নিবন্ধিত বৈধ স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের অনুকূলে স্বর্ণালঙ্কার রপ্তানিকারক হিসেবে রপ্তানি সনদ প্রদান করা হবে। বৈধভাবে স্বর্ণালঙ্কার রপ্তানি উৎসাহিত করতে রপ্তানিকারকদের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতসহ বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেওয়া হবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে বন্ডেড ওয়্যার হাউজ সুবিধা পাওয়া যাবে। হস্তনির্মিত ও মেশিনে তৈরি অলঙ্কার রপ্তানিতে প্রণোদনা থাকবে। স্বর্ণালঙ্কার রপ্তানিকারকদের অনুকূলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দের বিষয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনা করবে।

সর্বশেষ খবর