শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

পুলিশি নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আটকের পর পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে থানা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়া নৈশ প্রহরী রাসেল মিয়া (২১) মারা গেছেন। গতকাল ভোর ৩টা ২০মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক)  চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

রাসেলের বড় ভাই লিটন মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাসেল জেলা শহরের মধ্যপাড়ার শান্তিবাগের রবি মিয়ার ছেলে ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার এটিএম বুথের নৈশ প্রহরী। সোমবার শহরের কোর্ট রোডের সিটি সেন্টারের ‘স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউস’ নামে একটি কাপড়ের দোকানে চুরির ঘটনায় সদর মডেল থানায় মামলা হওয়ার আগেই পুলিশ রাসেলকে আটক করে থানায় নির্যাতন করে বলে অভিযোগ ওঠে। নির্যাতনের শিকার রাসেল ওইদিন রাতে সদর মডেল থানা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হন। রাসেলের মামা খবির মিয়া বলেন, পুলিশ বাড়ি থেকে থানায় ডেকে নিয়ে রাসেলকে নির্যাতন করেছে। পরে তাকে থানা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। যদিও স্বপ্নলোক ফ্যাশন হাউসের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলামের করা মামলায় আসামি অজ্ঞাত উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলায় তানজিল, আশিক ও শওকত নামে তিন যুবককে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি সোমবার দুপুরে রেকর্ড দেখানো হলেও এদিন রাত ১০টা পর্যন্ত থানায় চুরির ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ বা এজাহার জমা পড়েনি বলে জানিয়েছেন পুলিশের শীর্ষ মহল। তবে ‘অতি উৎসাহী’ হয়ে পুলিশ সেদিন দুপুরে স্বপ্নলোকের কয়েকজন কর্মচারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বিকালে সিটি সেন্টারের শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের নৈশ প্রহরী রাসেলকে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে আসে। জানা গেছে, স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউসের ক্যাশবাক্স থেকে নগদ অর্থসহ প্রায় তিন লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। এ কাপড়ের দোকানটি শহরের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির আত্মীয় হওয়ার সুবাদে পুলিশ চোর ধরার জন্য উঠেপড়ে লাগে। লিখিত কোনো অভিযোগ ছাড়াই ওইদিন দুপুরে সিটি সেন্টারের নৈশ প্রহরী ও স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউসের কর্মচারীসহ অন্তত আটজনকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। বিকালে থানায় নিয়ে আসা হয় ব্যাংকের নৈশপ্রহরী রাসেলকেও। এরপর রাসেলের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তার স্বজনরা। রাসেল সেদিন থানা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাসেলের মামা খবির মিয়া বলেন, পুলিশ বাড়ি থেকে থানায় ডেকে নিয়ে রাসেলকে নির্যাতন করেছে। পরে তাকে থানা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। পুলিশের দাবি, রাসেলকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।

সর্বশেষ খবর