শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইফতারে জমজমাট বেইলি রোড

মাহবুব মমতাজী

ইফতারে জমজমাট বেইলি রোড

নাট্যকর্মীদের কারণে এলাকাটি নাটকপাড়া নামে পরিচিত। এর বাইরেও আরেকটি পরিচয় পায় রমজান মাসে। পবিত্র এই মাসজুড়ে বেইলি রোড কিংবা নাটক সরণি পরিণত হয় ইফতার বাজারে। বসে স্থায়ী ও অস্থায়ী ইফতারির দোকান। এখানকার অভিজাত ইফতার বাজারের পরিধি ছড়িয়ে পড়ে আশপাশেও। বরাবরের মতো এবারও বেইলি রোডের বাহারি ইফতারিতে রয়েছে আভিজাত্য। রয়েছে আগের মতোই চাহিদা। প্রতিদিনই সমাগম ঘটে নানা শ্রেণি-পেশার ক্রেতার। ক্রেতাদের কথা, এখানকার বেশির ভাগ দোকানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রি হয়। মানও ভালো। পদ অনেক থাকায় ইফতারে বৈচিত্র্যও থাকে। বেইলি রোডে শখানেক নানা প্রকার ইফতারিসামগ্রী পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে— খাসির হালিম, গরুর হালিম, খাসির তেহারি, কিমা পরোটা, রেশমি জিলাপি, চিকেন কোপ্তা, চিকেন কাবাব, অ্যারাবিয়ান চিকেন, চিকেন হ্যানি গ্লোসিং, চিলি চিকেন, চিকেন ড্রামাস্টিক, চিকেন কাটলেট, চিকেন চপ, টানা পরোটা, দইবড়া, ফিরনি, ফালুদা, প্রাণ বল, চিকেন বল, ভেজিটেবল পাকুরা, চিকেন ফিঙ্গার স্টিক, চিকেন সাসলিক, চিকেন মিনি রোল, মিনি পিজ্জা, গরুর মগজ ভুনা, বিফ কাটা মসলা, চিকেন রোস্ট, দই বুরিন্দা, জয়পুরি জিলাপি, জালি কাবাব, চিকেন ঝাল ফ্রাই, গ্রিল, চিকেন সামুচা, বোম্বে জিলাপি, খাসির রান, এগ চপ, চিকেন ফ্রাই, বিফ মিনি কাবাব, চিকেন ললি এবং চিকেন উইং ইত্যাদি। বাহারি ইফতারি ছাড়াও নাটক সরণির ফাস্টফুড আইটেমের মধ্যে বার্গার, হটডগ, স্যান্ডউইচ, চিজ বল, পেস্ট্রি ও আইসক্রিমও পাওয়া যায়।

শান্তিনগর মোড় থেকে সোজা পশ্চিম দিকের রাস্তাটাই বেইলি রোড। রাজধানীর দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ইফতারিসামগ্রী কিনতে প্রতিদিনই আসেন এখানে। ছোট-বড় অর্ধশতাধিক বাহারি ইফতারির দোকান রয়েছে এ এলাকায়। দুপুরের পর মানুষের ভিড়ে রাস্তার দুই পাশের ইফতারির দোকানগুলো সরগরম হয়ে ওঠে। এ ছাড়া শান্তিনগর মোড়ে বসে শাহি হালিমের মেলা। এখানে সারা বছর যেসব দোকানে ফাস্টফুড, পিঠা বা অন্যান্য খাবার বিক্রি হয় সেগুলো রোজার মাসে নানা ধরনের বাহারি ইফতারিসামগ্রী নিয়ে হাজির হয়। গতকাল দুপুরে ‘সুইস’-এ গিয়ে দেখা যায়— তারা ইফতারের পসরা সাজাতে ব্যস্ত। তখনো শুরু হয়নি বিক্রি। দোকানটিতে ঢোকার মুখেই ১০০ পদের ইফতারের তালিকা ও দাম লেখা।

ছোলা-পিয়াজু থেকে শুরু করে মাংস-পরোটা সবই মেলে এখানে। বিক্রেতাদের মতে, গত বছরের তুলনায় ইফতারের দাম তেমন বাড়েনি। সাধারণ পরোটা, কিমা পরোটা ও টানা পরোটার চাহিদা এখানে বেশি। পরোটার সঙ্গে গরু বা মুরগির মাংস। রোজায় লাচ্ছি ও ফালুদা বিক্রি হয় বেশি। দুপুরের পরই তারা বিক্রি শুরু করে দেন। চলে ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত। পাশাপাশি বড় বড় ইফতার পার্টির জন্য প্যাকেট ইফতারও এসব দোকান থেকে সংগ্রহ করা হয়। তরুণ-তরুণীদের এখানকার ফুটপাথে বসেও ইফতার করতে দেখা যায়। বেইলি রোডের ইফতারিসামগ্রীর মধ্যে বাড়তি আকর্ষণ যোগ করে পিঠাঘরের পিঠা। এখানে পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, চিতই পিঠা, পান পিঠা, পাক্কান পিঠা, ভেজানো পিঠাসহ প্রায় ৫০ রকমের পিঠা মেলে। ইফতারে ফখরুদ্দিনের বিরিয়ানি ছাড়াও সুইস, স্কাইলার্ক, বারবিকিউ, নবাবি ভোজ, জলি-বি, হ্যালভেশিয়া, হকের মতো ব্র্যান্ড দোকানগুলোতে ক্রেতার ভিড় থাকে বেশি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর