বুধবার, ৬ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

কমিটি ছাড়া ভালোই চলছে ছাত্রলীগ কোথাও কোনো সমস্যা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

কমিটি ছাড়া ভালোই চলছে ছাত্রলীগ কোথাও কোনো সমস্যা নেই

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়েছে আজ ২৫ দিন। কিন্তু এখনো ঘোষণা করা হয়নি কমিটি। দিন যতই যাচ্ছে পদপ্রত্যাশীদের টেনশন ততই বাড়ছে। কবে ঘোষণা করা হবে, কারা আসছেন শীর্ষ পদে— এ নিয়ে কেন্দ্রীয় পদপ্রত্যাশীরা ছাড়াও সারা দেশে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কৌতূহল তীব্র। শীর্ষ পদের নেতাদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ শেষ পর্যায়ে। যে কোনো সময়ে ঘোষণা করা হতে পারে নতুন নেতৃত্ব। তবে কবে নাগাদ ঘোষণা করা হবে, কেউই নিশ্চিত করতে পারেনি। কবে কমিটি ঘোষণা করা হবে— জানতে চাইলে গতকাল আওয়ামী লীগের দুজন প্রভাবশালী নেতা বললেন, বিষয়টি নেত্রীর ওপর নির্ভর করছে। আমরা বলতে পারছি না। তবে কমিটি নেই তো কী হয়েছে?  ভালোই তো চলছে। কোথাও তো কোনো সমস্যা নেই। সংগঠনের কার্যক্রম কি ঝিমিয়ে পড়েছে? কোথাও সংঘর্ষ হয়েছে? 

গত ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয়। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন শেষ হয় নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ছাড়াই। প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি ঘোষণা করতে ছাত্রলীগের প্রতি নির্দেশ দেন। পরের দিন ১২ মে দ্বিতীয় অধিবেশনে কমিটি গঠনের দায়িত্বভার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই দিন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন— আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী যাচাই-বাছাই করে কমিটি ঘোষণা করবেন। এ জন্য দু-একদিন সময় লাগতে পারে। তবে সম্মেলনের ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা হয়নি।

সূত্রমতে, ছাত্রলীগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শীর্ষ এ দুই পদের জন্য ৩২৩ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এটা এক রেকর্ড। এর আগে কখনো এত বেশি সংখ্যক ছাত্রনেতা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি বলে ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এবার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যাপক যাচাই-বাছাই করেই কমিটি ঘোষণা করা হবে। এ জন্য সময় নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য পদপ্রত্যাশীদের পারিবারিক রাজনৈতিক মতাদর্শসহ সব ধরনের খোঁজখবর নিচ্ছেন। সরকারি একাধিক সংস্থা কয়েক দফা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের ব্যাপারে অনুসন্ধান রিপোর্ট দিয়েছে। সেগুলো আবার যাচাই-বাছাই করছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নিয়ে এবার দুটি বিষয় দেখতে চাচ্ছেন। প্রথমত, সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে কিনা। থাকলে সেগুলো আদৌ সত্য কিনা। দ্বিতীয়দ, কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা কার ব্যাপারে কতটা উৎসাহী। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতার মতে, সম্মেলনের ২৫ দিনেও কমিটি ঘোষণা না করা এই প্রথম। এর আগে আগের কমিটি পুনর্বহাল করার রেকর্ড আছে। কিন্তু কমিটিবিহীন রাখার রেকর্ড নেই। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা না হলেও ছাত্রলীগ চলছে। বর্তমান নেতৃত্বই আওয়ামী লীগ ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়াও কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এ পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ কোথাও বড় ধরনের অঘটনের মতো কিছু ঘটেনি বলে জানা গেছে।

ছাত্রলীগের জেলা ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা না হলেও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের আগে যেমন নিয়ন্ত্রণ ছিল, এখনো তাই আছে। সদ্য বিদায়ী কমিটির নেতারা নিয়মিত মধুর ক্যান্টিনে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের দিকনিদেশনা দিচ্ছেন। আবার যখন যে কর্মসূচি নেওয়া দরকার, রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে তা বাস্তবায়ন করছেন।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির শীর্ষ নেতাদের মতামত চাওয়া হলে এ বিষয়ে তারা কথা বলতে নারাজ।

সর্বশেষ খবর