প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। খবর বাসসের।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আইআরসি-প্রধানের মধ্যে মূলত রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করছে। তিনি মিলিব্যান্ডকে জানান, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছে এবং এতে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ স্থানে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের স্থানান্তরের লক্ষ্যে ভাসানচর নামের একটি দ্বীপের উন্নয়নকাজ চলছে। আইআরসি প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে জানান, রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে তিনি একটি টিম নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। ব্রিটিশ লেবার পার্টির রাজনীতিক মিলিব্যান্ড বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া হচ্ছে তাৎপর্যপূর্ণ এক মানবিক দৃষ্টান্ত, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি একটি সংকেত। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সাহায্যে আইআরসির একটি টিম বাংলাদেশে কাজ করছে এবং তাদের এ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ কার্যক্রমে আমরা বাংলাদেশ থেকে ১০০ স্টাফ নিয়োগ করব। এদিকে কূটনৈতিক প্রতিবেদক জানান, শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল কানাডার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও জি-৭ এর সভাপতি জাস্টিন ট্রুডোর আমন্ত্রণে কানাডা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৮ থেকে ১১ জুন কানাডায় অবস্থান করে প্রধানমন্ত্রী ১২ জুন দেশে ফিরবেন।

 গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।

মন্ত্রী বলেন, সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডার কুইবেক শহরে অনুষ্ঠিতব্য জি-৭ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এ ছাড়া তিনি জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠক করবেন। সফরকালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা করবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

১৯৩৩ সালে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের অনুরোধে প্রতিষ্ঠিত আইআরসি শরণার্থী এবং যুদ্ধ, নিপীড়ন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুতদের সহায়তায় কাজ করছে। সংস্থা বর্তমানে শরণার্থীদের পুনর্বাসন ও আত্মনির্ভরশীল করতে ৪০টিরও বেশি দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ২৮টি সিটিতে কাজ করছে।