মঙ্গলবার, ১২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

কঠোর নিরাপত্তায় ঈদ জামাতের প্রস্তুতি শোলাকিয়ায়

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন, কিশোরগঞ্জ

প্রতিবারের মতো এবারও দেশে ঈদুল ফিতরের সর্ববৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। এবারের ১৯১তম জামাতে ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ। বিকল্প ইমাম রাখা হয়েছে দুজনকে।  তারা হলেন শহরের বড় বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. সোয়াইব ও মারকায মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান। জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। বড় ঈদগাহ, বড় জামাত। লাখো মুসল্লির সঙ্গে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হয়—এ আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেক মুসল্লি। ২০১৬ সালে ঈদের দিন শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে এবার ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ঈদগাহ ও এর চারপাশ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে মাঠের দাগ কাটা, মেহরাব ও দেয়ালে চুনকাম করা, অজুখানা নির্মাণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ ঈদজামাত আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসন। মাঠ পরিদর্শনও করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। দুই বছর আগে জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখেই নিরাপত্তার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, ঈদের দিন শোলাকিয়ায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ১২টি সেক্টরে ভাগ করে ঈদগাহ ও এর আশপাশে এক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া মাঠের ভিতরে ও বাইরে সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। প্রয়োজনীয় ট্রাফিক ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। থাকবে আর্চওয়ে এবং ওয়াচ টাওয়ার। প্রত্যেক মুসল্লিকে তল্লাশির মাধ্যমে মাঠে প্রবেশ করানো হবে বলে তিনি জানান। ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, ঈদজামাত আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে এবার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে। ঈদের দিন পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও দায়িত্ব পালন করবেন। শান্তিপূর্ণভাবেই মুসল্লিরা ঈদজামাত আদায় করতে পারবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি ভয় ও শঙ্কা কাটিয়ে মুসল্লিদের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। দূরের মুসল্লিদের সুবিধার্থে দুটি বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঈদের দিন সকালে ভৈরব থেকে একটি ও ময়মনসিংহ থেকে একটি বিশেষ ট্রেন কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে শোলাকিয়া ঈদগাহের গোড়াপত্তন হয়। পরে হয়বত নগরের দেওয়ান মান্নান দাদ খান ঈদগাহে আরও কিছু জমি ওয়াকফ করে দেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৭ একর জমির ওপর এ ঈদগাহটি অবস্থিত।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহের পূর্বপাশে আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের কাছে পুলিশের চেক পোস্টে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আনছারুল হক ও জহিরুল ইসলাম নামে দুজন পুলিশ সদস্য, স্থানীয় গৃহবধূ ঝরণা রানী ভৌমিক ও আবির রহমান নামে এক জঙ্গি নিহত হয়।

সর্বশেষ খবর