শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
কুমিল্লায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার অধ্যক্ষের চিরকুট

ছাত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক ছিল না

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় ভাড়া বাসার বাথরুম থেকে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল ওহাবের (৬০) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকালে কুমিল্লার মহিলা কলেজ রোড মাদার কেয়ার হাসপাতালের পেছনে ভাড়া বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ২ নম্বর চৌয়ারা ইউনিয়নের হেমজোড়া গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের ছেলে। মৃত্যুর আগে তিনি দুটি চিরকুট লিখে গেছেন। চিরকুটে তিনি তার মৃত্যুতে স্ত্রী, সন্তানসহ কাউকে দায়ী করেননি। চিরকুটের এক স্থানে তিনি লেখেন—‘আল্লাহর কসম করে বলছি কোনো ছাত্রীর সঙ্গে আমার দৈহিক সম্পর্ক ছিল না।’ সূত্র জানায়, কুমিল্লার মহিলা কলেজ রোড মাদার কেয়ার হাসপাতালের পেছনে ভাড়া বাসার দ্বিতীয় তলায় থাকতেন প্রফেসর আবদুল ওহাব। পরিবারের সদস্য হিসেবে ছিল স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ও এক মেয়ে লাবিবা আক্তার। প্রফেসর আবদুল ওহাব মৃত্যুর আগে চিরকুটে লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নহে। দায়ী আমার নসিব। অধ্যক্ষ থাকা কালীন দু-একজনের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। সবচেয়ে বড় দুঃখ একজন শ্রদ্ধেয় এবং স্বনামধন্য ব্যক্তিকে আমি নাকি কী বলেছি। এ কথা শুনে আমার অন্তর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছে। কাকে এবং কে অভিযোগ আনল মৃত্যুর আগে তা উল্লেখ করলাম না। আমি সে ব্যক্তির জামাতা হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া তিনি আরও লেখেন, ‘এ কথা সত্য যে কোনো ছাত্রী আমার নিকট সহজে তার সমস্যার কথা বলত। আল্লাহর কসম করে বলছি কোনো ছাত্রীর সঙ্গে আমার দৈহিক সম্পর্ক ছিল না।’ তার স্ত্রী ও মেয়ে বলেন, প্রফেসর আবদুল ওহাব পেনশন, সম্পত্তি ও পরিবার নিয়ে মানসিকভাবে চিন্তিত ছিলেন। গতকাল ভোররাতে সাহরির পরে কোনো একসময় বাথরুমে ঝরনার পাইপের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি। মৃত্যুর আগে দুটি কাগজে দুটি চিরকুট লিখে গেছেন। এ ছাড়া কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন স্ত্রী ও মেয়ে বলতে পারছেন না। কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। মৃত্যুর আগে লেখা চিরকুটগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা। আবু ছালাম মিয়া আরও বলেন, ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে তার গলায় এবং অণ্ডকোষে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উল্লেখ্য, প্রফেসর আবদুল ওহাব কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে ২০১৪ সালের ২ জুন থেকে ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ সাল পর্যন্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সর্বশেষ খবর