বুধবার, ১৩ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

হঠাৎ বৃষ্টিতে হাঁটুপানি মহাসড়কে

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্

আকস্মিক ঝুম বৃষ্টি ঈদ করতে বাড়ি যাওয়ার পথের যাত্রীদের জন্য উৎপাত হয়ে দেখা দিয়েছে। আর এই বৃষ্টির পানির যন্ত্রণা বেশি দেখা যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর-টঙ্গী থেকে ভোগড়া ও গাজীপুর চৌরাস্তা অংশে।

সড়কের দুই পাশে পানি জমে এমন অবস্থা হয়েছে একটি গাড়ি বহু কষ্টেসৃষ্টে এগোতে পারে। ফলত টঙ্গী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ঘরমুখো মানুষের জন্য মহাবিরক্তিকর পথ। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ঈদের আগমুহূর্তে সব যেন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর সোহরাব আহমেদ মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাসন এলাকায় সকালে একটি রড বোঝাই ট্রাক ফেঁসে গেলে মহাসড়কে জ্যাম দেখা দেয়। ঘণ্টাখানেক কষ্টের পর ট্রাক সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু দুপুরের পর হঠাৎ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় আবারও জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। একে তো গাড়ির চাপ, তার ওপর হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি। বিশেষ করে গাজীপুরের শিববাড়ি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলায় যানজট লেগেই থাকছে। এ সড়কের আবদুল্লাহপুর-টঙ্গীতে গাড়ির চাপ ও বৃষ্টির পানি আটকে জলাবদ্ধতায় টঙ্গী বাজার, বাটামোড়, স্টেশনরোড, চেরাগআলী, কলেজ গেট, তারগাছ, গাজীপুরা, বড়বাড়ি, বোর্ডবাজার, বাসন, চৌধুরীবাড়ি এলাকায় গাড়ি চলে পিঁপড়ে গতিতে। অপরদিকে ভোগড়া বাইপাস মোড়ে চার রোডের গাড়ির চাপ ও বৃষ্টির পানিতে থমকে আছে যানবাহন। বাইপাস থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত যেন গাড়ি থেমে রয়েছে। ভোগড়া বাইপাস ও জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে টাঙ্গাইল যাওয়ার মহাসড়কে চলছে চার লেন উন্নয়নের কাজ। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত সড়কের চার লেন খুলে দেওয়ায় এ অংশে এখনো তেমন একটা যানজট চোখে পড়েনি। গতকাল সকাল থেকে চন্দ্রা-এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন ও সড়কের ২৩টি ছোট-বড় সেতু খুলে দেওয়ায় অনেকটা স্বস্তিতে আছেন এ মহাসড়কের যাত্রীরা। টঙ্গী স্টেশনরোড থেকে সিলেট যাওয়ার সড়কে টঙ্গী স্টেশন রোড, টিঅ্যান্ডটি, মাঝুখান, পুবাইল, কালীগঞ্জ ও পুবাইল থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত কিছুটা যানজট দেখা দিয়েছে।

গাজীপুর হয়ে কিশোরগঞ্জ সড়কের গাড়ির চাপও তীব্র। বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা থেকে কাপাসিয়া হয়ে কিশোরগঞ্জ সড়ক সরু হওয়ায় এবং স্থানে স্থানে ছোট ছোট সরু সেতু থাকায় এই সড়কেও যানজট হচ্ছে। এ সড়ক সরু হওয়ায় গতকালও সড়কের সূর্যনারায়ণপুর এলাকায় দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। এতে ঘটনাস্থলেই এক চালকের মৃত্যু হয়। গতকাল ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার প্রবেশ মুখ টঙ্গী আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে যানজট দেখা দিয়েছে। মহাসড়কের কয়েকটি অংশে পানির জন্য যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। বিশেষ করে ভোগড়া বাইপাস ও টঙ্গীর কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধা বেশি। অপরদিকে ভোগড়া বাইপাস থেকে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা হয়ে টাঙ্গাইল মির্জাপুর পর্যন্ত অন্তত ৪৫ কিলোমিটার সড়কজুড়ে তেমন একটা যানজট দেখা না গেলেও কোনাবাড়ি এলাকায় গাড়ির জটলা বেশি। গাজীপুর চৌরাস্তায় ও ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকায় ফ্লাইওভার ও ড্রেন নির্মাণ কাজ এবং বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় মহাসড়কের এসব অংশে চার লেনের পরিবর্তে এক লেনে পরিণত হয়েছে।

এতে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে।

অপরদিকে মহাসড়কের টঙ্গী বাজার, বোর্ডবাজার, সাইনবোর্ড এবং গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে রাস্তায় ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

অপরদিকে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে উদ্বোধনের আগেই গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন খুলে দিয়েছি। হঠাৎ যাত্রীদের চাপ সৃষ্টি যাতে না হয় এ জন্য কারখানাগুলোকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দিতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর